উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাধাকৃষ্ণনের প্রতিপক্ষ ডিএমকের শিবা

দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম (DMK)-র সিনিয়র নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ তিরুচি শিবা ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট (Vice President)পদে ইন্ডি জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হতে পারেন বলে সূত্রের…

Vice President

দ্রাবিড় মুন্নেত্র কঝগম (DMK)-র সিনিয়র নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ তিরুচি শিবা ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট (Vice President)পদে ইন্ডি জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এই তথ্য ডিএমকে নেতা এবং তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের আলোচনার পর ডিল্লির রাজনৈতিক মহলে প্রকাশ পেয়েছে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ আগস্ট নির্ধারিত হয়েছে। এই ঘোষণা ইন্ডি জোটের নেতাদের মধ্যে আজ সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিতব্য একটি বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হতে পারে।

   

বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখরের পদত্যাগের পর এই নির্বাচনের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ধনখর, যিনি ২০২২ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করেন। তাঁর পদত্যাগের পর নির্বাচন কমিশন নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য সময়সূচি ঘোষণা করে।

জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) তাদের প্রার্থী হিসেবে মহারাষ্ট্রের গভর্নর সি পি রাধাকৃষ্ণনকে মনোনীত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইন্ডি জোট তিরুচি শিবাকে তাদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

তিরুচি শিবা তামিলনাড়ুর একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং ডিএমকে-র রাজ্যসভার নেতা। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং সম্প্রতি চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন, যা তাঁকে ডিএমকে-র প্রথম সাংসদ হিসেবে এই কৃতিত্ব অর্জন করতে সাহায্য করেছে।

তিনি দলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ডিএমকে-র উপ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। সম্প্রতি, তিনি কে পনমুদির পরিবর্তে এই পদে নিযুক্ত হন, যিনি শৈববাদ ও বৈষ্ণববাদ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে দলীয় পদ থেকে সরানো হয়েছিলেন।

তিরুচি শিবা রাজ্যসভায় তাঁর সক্রিয় ভূমিকার জন্য পরিচিত। তিনি বিরোধী দলের পক্ষে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরব হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর দমনের অভিযোগ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়।

Advertisements

সম্প্রতি, তিনি বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটিকে ‘গণতান্ত্রিকভাবে সঠিক নয়’ বলে সমালোচনা করেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখর বিরোধীদের কথা বলার সুযোগ দিচ্ছেন না, যা সংসদীয় গণতন্ত্রের উপর আঘাত।

ইন্ডি জোটের প্রার্থী হিসেবে তিরুচি শিবার মনোনয়ন তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে ডিএমকে-র ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। এক্স-এ প্রকাশিত পোস্টগুলোতে এই সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “তিরুচি শিবা ইন্ডি জোটের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলে এটি ডিএমকে-র জন্য স্বর্ণযুগ হবে।”

তবে, কিছু পোস্টে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে তিরুচি শিবার পূর্ববর্তী মন্তব্যের কারণে, যা কিছু কংগ্রেস নেতার কাছে বিতর্কিত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।এই নির্বাচন ইন্ডি জোটের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হতে চলেছে। তিরুচি শিবার মতো একজন অভিজ্ঞ এবং গ্রহণযোগ্য নেতাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জোটের ঐক্য এবং কৌশলগত শক্তি প্রদর্শনের একটি প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

আইসি-কে কুকথা, তিন মাস পর আদালতে অনুব্রত, চাইলেন জামিন

তবে, এনডিএ-র শক্তিশালী প্রার্থী এবং সংসদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে এই নির্বাচন বিরোধীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।তিরুচি শিবার প্রার্থিতা ঘোষণার জন্য ইন্ডি জোটের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকের ফলাফলের দিকে সবার দৃষ্টি রয়েছে। এই ঘটনা ভারতের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে এবং তামিলনাড়ুর প্রতিনিধিত্ব জাতীয় রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হতে পারে।