ওয়াশিংটন ও আন্তর্জাতিক মহলে ফের উত্তেজনা বাড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Trump Putin)। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক (Trilateral Summit) আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। সূত্র বলছে, সম্প্রতি আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ইউরোপীয় নেতাদের কাছে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি চান ২২ আগস্টের মধ্যেই এই বৈঠক হোক।
শনিবার আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের বহুল আলোচিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। দুই-দু’ বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতে সমাধানের সম্ভাবনা এখনও অধরা। বৈঠক শেষে যৌথ মঞ্চে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনাগুলি ছিল “অত্যন্ত ফলপ্রসূ”, তবে স্পষ্ট করে দেন— “কোনো সমঝোতা হবে না, যতক্ষণ না সত্যিই সমঝোতা হয়।” তিনি আরও জানান, শিগগিরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন এবং তাঁকে একটি শান্তি চুক্তি করতে অনুরোধ জানাবেন।
ইতিমধ্যেই জেলেনস্কি তাঁর এক্স (পূর্বতন টুইটার) পোস্টে জানিয়েছেন, সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় নেতাদেরও এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি।
শনিবার জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ (Friedrich Merz) মন্তব্য করেছেন যে, সোমবার ওয়াশিংটনের বৈঠকের পর ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট প্রবল। ইউরোপীয় দেশগুলির অবস্থানও এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব ইউরোপ জুড়েই গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি সত্যিই ট্রাম্প–পুতিন–জেলেনস্কি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তবে সেটি হবে যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম আনুষ্ঠানিক ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন। তবে প্রশ্ন উঠছে, এই বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন কোনো কার্যকর চুক্তির পথে এগোবে কি না। পুতিনের অবস্থান এতদিন ধরে কঠোর, অন্যদিকে জেলেনস্কি বারবার বলেছেন, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত অখণ্ডতা নিয়ে কোনো আপস সম্ভব নয়।
অনেকের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রদর্শন করতে চাইছেন। অন্যদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলি যুদ্ধের সমাধান চায় দ্রুত, কারণ দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ অর্থনীতি ও নিরাপত্তা—দু’দিকেই চাপ সৃষ্টি করছে। এ অবস্থায় যদি ওয়াশিংটনের বৈঠক সফল হয়, তবে শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে পারে।
তবে আপাতত বিশ্ববাসীর নজর সোমবারের ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠকে। সেখানেই হয়তো স্পষ্ট হবে, আদৌ কি আগামী দিনে ট্রাম্প, পুতিন এবং জেলেনস্কি একই টেবিলে বসবেন, নাকি যুদ্ধের সমাধান এখনও অনেক দূরে রয়ে গেল।