আন্তর্জাতিক বাজারে ট্যারিফ নিয়ে তৈরি অনিশ্চয়তা এবং ক্রুড অয়েলের দাম টানা কমতে থাকার প্রভাব পড়েছে সোনার বাজারেও (Gold Prices)। গত এক সপ্তাহে ভারতে সোনার দামে বড়সড় পতন নথিভুক্ত হয়েছে। প্রায় ১,৮৬০ টাকা কমেছে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম এবং ১,৭০০ টাকা কমেছে ২২ ক্যারেট সোনার দামে।
আজ রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে দেশজুড়ে ২৪ ক্যারেট সোনা গড়ে প্রতি ১০ গ্রামে ১,০১,১৮০ টাকা এবং ২২ ক্যারেট সোনা ৯২,৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
শহরভিত্তিক সোনার দাম
দিল্লি: জাতীয় রাজধানীর সর্রাফা বাজারে দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি। এখানে ২৪ ক্যারেট সোনা প্রতি ১০ গ্রামে ১,০১,৩৩০ টাকা এবং ২২ ক্যারেট সোনা ৯২,৯০০ টাকা।
কলকাতা, মুম্বই ও চেন্নাই: এই তিন মহানগরে ২৪ ক্যারেট সোনা ১,০১,১৮০ টাকা এবং ২২ ক্যারেট সোনা ৯২,৭৫০ টাকা দরে লেনদেন হচ্ছে।
লখনউ, চণ্ডীগড় ও জয়পুর: এখানে ২৪ ক্যারেট সোনা ১,০১,৩৩০ টাকা এবং ২২ ক্যারেট সোনা ৯২,৯০০ টাকা।
সোনা ও রুপোর দাম প্রতিদিন বিভিন্ন বৈশ্বিক ও দেশীয় কারণে ওঠানামা করে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম নির্ধারণ হয় মার্কিন ডলারে। ফলে ডলার ও ভারতীয় টাকার বিনিময় হারের প্রভাব সরাসরি পড়ে সোনার দামে। যদি ডলার শক্তিশালী হয় বা টাকা দুর্বল হয়, তবে ভারতীয় বাজারে সোনা আরও দামি হয়ে যায়।
ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সোনা আমদানিকারক দেশ। ফলে আমদানি শুল্ক, জিএসটি ও স্থানীয় করের প্রভাবও শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের দিতে হয়।
অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক অস্থিরতা যেমন—যুদ্ধ, মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি বা সুদের হারের পরিবর্তন—এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সোনাকে ‘সেফ হ্যাভেন’ হিসেবে বিবেচনা করেন। এতে চাহিদা বাড়ে এবং দামও বাড়ে। অন্যদিকে পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে দাম কমতে থাকে।
ভারতে বিয়ে, উৎসব ও বিশেষ শুভ উপলক্ষে সোনার চাহিদা ব্যাপক। এই সময়ে সোনার দাম প্রায়শই ঊর্ধ্বমুখী হয়। অপরদিকে অফ সিজনে চাহিদা কমলে দামও কিছুটা নেমে আসে।
সোনা বরাবরই মুদ্রাস্ফীতি থেকে সুরক্ষা ও নিরাপদ বিনিয়োগের অন্যতম ভরসাযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়। যখন শেয়ার বাজারে ঝুঁকি বাড়ে বা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তখন মানুষ সোনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন রিজার্ভে সোনা যোগ করে, তখন বৈশ্বিক চাহিদা ও দাম দুই-ই বাড়ে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মিলিত প্রভাবে সোনার দাম এক সপ্তাহে ১,৮০০ টাকারও বেশি কমেছে। তবে আসন্ন উৎসবের মরশুমে আবারও চাহিদা বেড়ে গেলে দামের গতি কোন দিকে যাবে, তা নজর রাখছে বিনিয়োগকারী থেকে সাধারণ ক্রেতা সকলেই।