নয়াদিল্লি: ভারত সরকারের ঘোষণায় ১৪ অগাস্ট পালিত হচ্ছে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’। উদ্দেশ্য একটাই- স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত সেই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া, যখন দেশভাগের আগুনে লক্ষ লক্ষ মানুষ শেকড়হীন, বাস্তুচ্যুত ও নিঃস্ব হয়েছিল। সেই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে পৌঁছে দিতে এবার এনসিইআরটি (NCERT) তৈরি করেছে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য বিশেষ পাঠ্য মডিউল।
এই মডিউলে ছাত্রছাত্রীদের জানানো হবে, কীভাবে ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তানের বিভাজন সাধারণ মানুষের জীবনে অমানবিক দুর্ভোগ নামিয়ে এনেছিল এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকে গণতান্ত্রিক সমাজকে কী শিক্ষা নিতে হবে।
কারা দায়ী ছিল দেশভাগের জন্য?
এনসিইআরটি-র পাঠ্য মডিউল স্পষ্ট বলছে— ভারত ভাগ কোনও এক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়। এর জন্য দায়ী ছিলেন তিন ব্যক্তি/গোষ্ঠী:
মহম্মদ আলি জিন্না — যিনি সরাসরি দেশভাগ দাবি করেন।
কংগ্রেস — যারা শেষ পর্যন্ত দেশভাগ মেনে নেয়।
লর্ড মাউন্টব্যাটেন — যিনি এর বাস্তবায়ন ঘটান।
ব্রিটিশদের অবস্থান India partition history
মডিউলের দাবি, ব্রিটিশ সরকার স্বাধীন ভারতের পক্ষে ছিল, তবে বিভক্ত ভারতের নয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল, ভারতকে ‘ডোমিনিয়ন মর্যাদা’ দেওয়া- অর্থাৎ নামমাত্র রাজা থাকবেন ব্রিটিশ, কিন্তু প্রশাসন চলবে ভারতীয়দের হাতে। প্রদেশগুলিকে দেওয়া হয়েছিল ডোমিনিয়নের সঙ্গে যুক্ত বা বিচ্ছিন্ন থাকার বিকল্প। কিন্তু কংগ্রেস সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
নেতাদের দ্বিধা ও সিদ্ধান্ত
দেশের বড় নেতাদের মধ্যেও দেশভাগ নিয়ে ছিল বিভাজিত মতামত। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল প্রথমে দেশভাগের বিরোধী ছিলেন, কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির চাপে একে ‘কঠিন ওষুধের মতো’ গ্রহণ করেন।
লর্ড মাউন্টব্যাটেন বলেন, “আমি ভারত ভাগ করিনি, ভারতীয় নেতারাই অনুমোদন করেছিলেন। আমি শুধু বাস্তবায়ন করেছি।” মহাত্মা গান্ধী দেশভাগের বিরোধী ছিলেন। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে তিনি বলেন, “কংগ্রেস দেশভাগ মেনে নিলে তা আমার পরামর্শের বিরুদ্ধে হবে। তবে আমি হিংসার সঙ্গে এর বিরোধিতা করব না।”
অবশেষে নেহরু ও প্যাটেল গৃহযুদ্ধের ভয় থেকে দেশভাগে সম্মতি দেন। গান্ধীজিও আর প্রতিবাদে অনড় থাকেননি। ১৪ জুন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় তিনি অন্য নেতাদেরও দেশভাগে রাজি করান।
শিক্ষা ও স্মরণ
এই মডিউলের মূল লক্ষ্য, নতুন প্রজন্ম যেন বুঝতে পারে- স্বাধীনতার উজ্জ্বল আলো যেমন আমাদের পথ দেখায়, তেমনি বিভাজনের অন্ধকারও আমাদের শিক্ষা দেয় শান্তি, সহাবস্থান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অপরিহার্যতা৷
Bharat: India observes ‘Partition Horrors Remembrance Day’ on August 14. A new NCERT module for students details the history and key figures behind the 1947 partition, including Jinnah’s demand, Congress’s acceptance, and Mountbatten’s role, aiming to teach the new generation about this tragic event.