শনিবার সকাল থেকেই রাজ্যে উৎসবের আবহ। একদিকে জন্মাষ্টমী, অন্যদিকে ‘খেলা হবে দিবস’। এই দ্বিগুণ আনন্দের দিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকালে তিনি নিজের এক্স (Twitter) হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে ভক্তদের অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে বাংলার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ ও ক্রীড়াবিদদেরও খেলা হবে দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) লিখেছেন, “সকলকে জন্মাষ্টমীর আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদে সকলের জীবনে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সুখ প্রতিষ্ঠিত হোক।” একই সঙ্গে তিনি খেলা হবে দিবসের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তাঁর কথায়, “আজ খেলা হবে দিবস। এই দিনে আমি বাংলার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ ও প্রতিটি ক্রীড়াবিদকে অভিনন্দন জানাই। খেলাধুলার মধ্য দিয়েই সমাজে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক।”
রাজ্যে জন্মাষ্টমীকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই বিশেষ অনুষ্ঠান পালিত হয়। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল, সর্বত্র শ্রীকৃষ্ণ ভক্তরা ভজন-সংকীর্তন, মন্দির সজ্জা, উপবাস ও পুজোর মধ্য দিয়ে এই দিনটিকে পালন করেন। ভোর থেকেই নানা জায়গায় মন্দিরে ভিড় জমেছে। সকাল থেকেই শ্রীকৃষ্ণের মূর্তিতে অঞ্জলি দিতে দেখা গিয়েছে ভক্তদের। এমন দিনে মুখ্যমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের আনন্দকে আরও উজ্জ্বল করেছে।
অন্যদিকে, কয়েক বছর ধরেই ১৬ আগস্ট বাংলায় পালিত হচ্ছে ‘খেলা হবে দিবস’। রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে শুরু হলেও এখন তা এক উৎসবে পরিণত হয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে যুব সমাজকে সক্রিয় করে তোলা এবং সুস্থ জীবনের বার্তা পৌঁছে দেওয়াই এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর বার্তায় সেই দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “খেলা জীবনের অঙ্গ। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে মানুষ সুস্থ থাকে, একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কও দৃঢ় হয়। তাই বাংলার প্রতিটি ক্রীড়াপ্রেমীকে অভিনন্দন।”
রাজ্যের ক্রীড়ামহলেও মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) এই শুভেচ্ছা বার্তা যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়রা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে খেলাধুলার প্রতি যে উৎসাহ দেখানো হচ্ছে, তা যুব সমাজকে খেলায় আগ্রহী করে তুলছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বহু নতুন প্রতিভা উঠে আসছে। খেলা হবে দিবস সেই প্রতিভাদের তুলে ধরারও এক বড় মঞ্চ হয়ে উঠছে।
এদিন সকাল থেকেই একাধিক জায়গায় খেলা হবে দিবস উপলক্ষে ফুটবল ম্যাচ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। স্কুল-কলেজেও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিনটি পালন হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার পর অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উৎসাহ আরও বেড়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) সবসময় উৎসব ও খেলাধুলার মাধ্যমে সমাজে ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছেন। জন্মাষ্টমীর মতো ধর্মীয় উৎসব হোক কিংবা খেলা হবে দিবসের মতো সামাজিক উদযাপন—প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চান। শনিবার সকালের বার্তাতেও তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, শনিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) শুভেচ্ছা বার্তা রাজ্যে এক দ্বিগুণ উৎসবের আবহ তৈরি করেছে। জন্মাষ্টমীর ভক্তি আর খেলা হবে দিবসের উচ্ছ্বাস মিলেমিশে গেছে একে অপরের সঙ্গে। ভক্তরা যেমন মন্দিরমুখী হয়েছেন, তেমনি ক্রীড়াপ্রেমীরা নেমেছেন মাঠে। উভয় ক্ষেত্রেই শান্তি, সৌহার্দ্য ও আনন্দের বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে বাংলার সর্বত্র।