ত্রিবান্দ্রমে ১৪ আগস্ট তারিখে কংগ্রেস একটি জোরালো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে, যার নাম ‘ভোট চোর, গদ্দি ছোড়’ (Kerala)। এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে.সি. ভেনুগোপাল, কেরল ও লাক্ষাদ্বীপের জন্য এআইসিসি সম্পাদক দীপা দাসমুন্সি এবং কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (কেপিসিসি) শীর্ষ নেতা ও কর্মীরা।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে কংগ্রেস ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ তুলে গণতন্ত্র ও জনগণের ম্যান্ডেট রক্ষার জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোটার তালিকায় কারচুপি এবং ভোট চুরির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দলের নেতা রাহুল গান্ধী এই অভিযোগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বিশেষ করে কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট চুরির প্রমাণ উপস্থাপন করেছিলেন।
তিনি দাবি করেছেন যে, এই কারচুপি কেবল একটি কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি জাতীয় স্তরে এবং পদ্ধতিগতভাবে সংঘটিত হয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন এই কারচুপির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বিজেপি সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। এই প্রেক্ষাপটে, কংগ্রেস সারা দেশে ‘ভোট চোর, গদ্দি ছোড়’ প্রচারাভিযান শুরু করেছে।
ত্রিবান্দ্রমে এই প্রতিবাদ মিছিলটি ছিল এই প্রচারাভিযানের একটি অংশ। ১৪ আগস্ট সন্ধ্যা ৮টায় শুরু হওয়া এই মশাল মিছিলে কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা তীব্র স্লোগানের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই কর্মসূচি স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আয়োজিত হওয়ায় এটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ কংগ্রেস এই প্রতিবাদকে গণতন্ত্র রক্ষার একটি লড়াই হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
ত্রিবান্দ্রমের মশাল মিছিলে অংশ নিয়েছেন কে.সি. ভেনুগোপাল, যিনি এই প্রচারাভিযানের অন্যতম প্রধান কাণ্ডারি। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, বরং ভারতের গণতন্ত্রের আত্মা রক্ষার লড়াই।
মিছিলে দীপা দাসমুন্সি এবং কেপিসিসির অন্যান্য নেতারা জনগণের মধ্যে এই অভিযোগ তুলে ধরতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। মিছিলে উপস্থিত কর্মীরা ‘ভোট চোর, গদ্দি ছোড়’ স্লোগান তুলে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কংগ্রেসের এই প্রচারাভিযান তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত। প্রথম পর্যায়ে, ১৪ আগস্ট সারা দেশের জেলা সদরে ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও মশাল মিছিল’ আয়োজিত হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, ২২ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের রাজধানী এবং প্রধান শহরগুলিতে ‘ভোট চোর, গদ্দি ছোড়’ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
তৃতীয় পর্যায়ে, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চালানো হবে, যার লক্ষ্য পাঁচ কোটি স্বাক্ষর সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া। এই অভিযানের মাধ্যমে কংগ্রেস জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য জনমত গঠনের চেষ্টা করছে। এই প্রতিবাদ কেবল কেরলে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সারা দেশে কংগ্রেসের একটি সমন্বিত প্রচারাভিযানের অংশ।
কংগ্রেস দাবি করেছে যে, বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে ‘ভোট চুরি’র মাধ্যমে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, এই লড়াই কেবল কংগ্রেসের নয়, বরং ভারতের গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার জন্য।
ত্রিবান্দ্রমের এই মিছিলে কেরলের কংগ্রেস কর্মীরা তাদের ঐক্য ও সংকল্প প্রদর্শন করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি ক্ষমতায় থাকার জন্য ভোটার তালিকায় কারচুপি, জাল ভোট যোগ করা এবং বিরোধী দলের ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার মতো কৌশল অবলম্বন করছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে, কংগ্রেস জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে এবং নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এই প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
ত্রিবান্দ্রমের ‘ভোট চোর, গদ্দি ছোড়’ মশাল মিছিল কংগ্রেসের গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিশ্রুতির একটি শক্তিশালী প্রকাশ। এই প্রতিবাদের মাধ্যমে দলটি জনগণের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে যে, ভোট চুরি কেবল একটি নির্বাচনী কারচুপি নয়, বরং এটি জনগণের অধিকার ও পরিচয়ের উপর আঘাত।
দিঘার জগন্নাথধামে প্রথমবার জন্মাষ্টমী, থাকছে বিশেষ আকর্ষণ
কংগ্রেসের এই আন্দোলন আগামী দিনে আরও তীব্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে, বিশেষ করে বিহারের মতো রাজ্যগুলিতে যেখানে শীঘ্রই বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রচারাভিযান কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশল এবং জনগণের সমর্থন সংগ্রহের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ভারতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।