Gandhiji approved killing of 60 strays
নয়াদিল্লি: মহাত্মা গান্ধীকে সাধারণত আমরা হিংসাহীনতার প্রতীক হিসেবে মনে করি। তিনি তার চিন্তাধারায় হিটলারের জার্মানি থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের ইজরায়েল পর্যন্ত সমাজ, রাজনীতি ও মানবতার বিষয়টি স্পর্শ করেছেন। কিন্তু কমই মানুষ জানে, তিনি পথ কুকুরের বিষয়েও চিন্তাভাবনা করেছেন। আর আজ, দিল্লি ও ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়নের পথকুকুর-কে ধরে নির্বীজন ও আশ্রয়ে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় এসেছে। গান্ধীজি নিজে পথ কুকুরদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং চাইতেন, এরা খাদ্য ও যত্ন পাক।
কখন কুকুর হত্যা সমর্থনযোগ্য?
গান্ধীজির দৃষ্টিতে, পথ কুকুরদের মানবিক যত্ন ও সম্মান পাওয়া উচিত। তবে যখন কোনো কুকুর বিপজ্জনক হয়ে ওঠে বা মানব নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তখন “দূর্ঘটনায় কর্তব্য” হিসেবে তার হত্যা সমর্থনযোগ্য।
১৯২৬ সালে আহমেদাবাদের একজন মিল মালিক গান্ধীজির কাছে ৬০টি রেবিড কুকুরের বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছিলেন, যারা তাঁর মিলের প্রাঙ্গণে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অহিংসার মূলনীতি মাথায় রেখেই গান্ধীর উত্তর ছিল সংযমী, বাস্তবমুখী এবং হিংসাহীনতার নীতি অনুযায়ী।
পথ কুকুর সমাজের সভ্যতা বা সহমর্মিতার প্রতীক নয় Gandhiji approved killing of 60 strays
গান্ধীজি লিখেছিলেন, “রাস্তায় পথ কুকুর সমাজের সভ্যতা বা সহমর্মিতার প্রতীক নয়; বরং এটি সমাজের অবহেলা ও উদাসীনতার ইঙ্গিত।” তিনি আরও বলেছিলেন, “কুকুর আমাদের বিশ্বস্ত সঙ্গী। তাদের যথাযথ যত্ন নেওয়া উচিত। রাস্তায় ফেলে দেওয়া ‘লজ্জাজনক’ এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব এভাবে পালনে ব্যর্থ হচ্ছি।”
গান্ধীজি বলেছিলেন, সত্যিকার মানবিকতার পরিচয় হল কুকুরকে ব্যক্তিগতভাবে যত্ন নেওয়া বা এমন সংস্থাকে সহায়তা করা যা তাদের দেখভাল করে। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্য প্রাণীর সেবার মাধ্যমে মানবিক দায়িত্ব পালন করা উচিত।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরকে হত্যা করা ন্যূনতম অপরাধ
তবে গান্ধী অযাচিত হত্যা সমর্থন করেননি। তার সমর্থন সীমিত ছিল কেবল “দূর্ঘটনায় কর্তব্য” অর্থাৎ যখন কুকুর মানব সমাজের জন্য প্রকৃত বিপদ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন, “যদি কুকুর সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং নিজের বা রাষ্ট্রের কোনো ব্যবস্থা নেই, তবে তাদের হত্যা করে দেরিতে মৃত্যু থেকে রক্ষা করাই ন্যূনতম হিংসা।”
গান্ধী এ বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন যে, যদি কুকুরদের অবহেলা করা হয়, তাহলে সমাজকে একসময় নীরব কাস্ট্রেশন বা হত্যা করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি লিখেছিলেন, “যদি রেবিজ বা জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরকে হত্যা করা হয়, তবে তা ন্যূনতম অপরাধ; যদি না করা হয়, তবে তা আরও গুরুতর অপরাধ।”
প্রসঙ্গত, গান্ধীর এই দৃষ্টিভঙ্গি ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টে এসেছে। তখন সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুশ্যান্ত দাভে গান্ধীর উদ্ধৃতি ব্যবহার করে দেখান যে, মালিকবিহীন প্রাণী সমাজের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। গান্ধী লিখেছিলেন, “যখন কুকুর সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ, তখন তাদের হত্যা করা ন্যায্য।”
গান্ধীর মূল শিক্ষা স্পষ্ট: প্রকৃত সহানুভূতি মানে হলো প্রাণীর প্রতি যত্ন নেওয়া সঙ্গে সঙ্গে সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বেড়ানো কুকুরকে যত্ন দেওয়া সম্ভব হলে সুরক্ষা নিশ্চিত করা উচিত, তবে যখন বিপদ দেখা দেয়, তখন পদক্ষেপ নেওয়াও মানবিক দায়িত্বের অংশ।
Bharat: Mahatma Gandhi’s views on stray dogs are resurfacing amid the Supreme Court’s debate on Delhi-NCR’s stray dog issue. Learn about Gandhi’s unique philosophy on animal welfare, compassion, and his pragmatic advice on dealing with rabid dogs.