কলকাতা: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়েছিলেন নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বিভাস অধিকারী। তবে গত এক বছর প্রায় নীরব থাকার পর নয়ডায় ভুয়ো থানা মামলায় গ্রেফতার হন এই তৃণমূল নেতা৷ এর পর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। এবার উঠে এল তাঁর তথাকথিত ‘আদালত’-এর কাহিনি, যা তদন্তকারীদের হতবাক করে দিয়েছে (Bibhas Adhikari’s ashram court)।
স্থানীয় সূত্র ও নয়ডা পুলিশের হাতে আসা নথি অনুযায়ী, নলহাটিতে বিভাসের একটি আশ্রমই ছিল তাঁর ‘সালিশি সভা’র কেন্দ্র। আশ্রমকে ঢাল করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার জানা গেল, এখানেই জমি-বিবাদের মীমাংসার নামে বসত অনানুষ্ঠানিক ‘আদালত’। বিচারকও তিনিই, আর ওসিও তিনিই।
তদন্তে মিলেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য-বিভাসের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ন্যাশনাল ব্যুরো অব সোশ্যাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস জমি সংক্রান্ত সমস্যার জন্য নোটিস পাঠাত। সংস্থার নামের সঙ্গে ইন্টারপোলের লোগো ও ভুয়ো থানার প্রতীক ব্যবহার করে কলকাতার বেলেঘাটায় অফিস খোলা হয়েছিল। এখানেই প্রাক্তন আইপিএস ও বিজেপি নেতা দেবাশিস ধর পরামর্শদাতা হিসেবে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
নোটিসে জমির পক্ষদের আশ্রমে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ থাকত, অফিসে নয়। হাজিরা এড়ালে পাল্টা মামলার হুমকি দেওয়া হত। তদন্তকারীদের ধারণা, আসল উদ্দেশ্য ছিল ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ও জমি দখল।
আইন বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন—যখন আদালত আছে, তখন কেন ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জমি-বিবাদ মেটাবে? আর কেনই বা ‘বিচার’ হবে রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত আশ্রমে? সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থাগুলি।