ধূমকেতু প্রাইম টাইমে সব হলে বাংলার শো ৫০%

দশ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মুক্তির মুখে দেব ও শুভশ্রীর বহুচর্চিত ছবি ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। জন্মের পরই হারিয়ে যাওয়া সন্তানের মতো এই ছবির জন্য…

ধূমকেতু প্রাইম টাইমে সব হলে বাংলার শো ৫০%

দশ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মুক্তির মুখে দেব ও শুভশ্রীর বহুচর্চিত ছবি ‘ধূমকেতু’ (Dhumketu)। জন্মের পরই হারিয়ে যাওয়া সন্তানের মতো এই ছবির জন্য অপেক্ষা করেছেন প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা। সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন প্রযোজক দেব ও রানা সরকার। আগামী ১৪ আগস্ট থেকে দেশের প্রেক্ষাগৃহে শুরু হবে এই ছবির যাত্রা। মুক্তির আগেই বাংলার চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অভূতপূর্ব উন্মাদনা।

দীর্ঘ দশ বছরের পথচলা
পরিচালকের কথায়, “ভাবনার বীজ থেকে চিত্রনাট্যের যৌবনে পা দিয়েই ‘ধূমকেতু’ আমাদের টিমের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে ছবিটি মুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ দশ বছর।” এই সময়ের মধ্যে বদলেছে সমাজ, বদলেছে মানুষের রুচি ও সিনেমার ভাষা। দর্শকও বদলেছেন—সুইজারল্যান্ডে গান শুট করে আর দর্শক টানা যাচ্ছিল না। তারা চাইছিল নতুন মেজাজের, নতুন আঙ্গিকের বাংলা ছবি।

   

বদলের পথে দেব ও শুভশ্রী
দেব ‘বুনোহাঁস’ থেকে শুরু করে ‘পরিণীতা’ পর্যন্ত নিজের অভিনয়-যাত্রায় বৈচিত্র্য এনেছেন, আর শুভশ্রী ‘বাবলি’ ও ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’-এর মতো চরিত্রে শহুরে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। দু’জনেই তথাকথিত কমার্শিয়াল ছবির গণ্ডি ভেঙে অন্য ধারার ও কনটেন্ট-ড্রিভেন ছবিতে হাত দিয়েছেন।

‘ধূমকেতু’র জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত
‘ধূমকেতু’ মুক্তিকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকার গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছে—বাংলার প্রতিটি হলে প্রাইম টাইমে ৫০% শো বাংলা ছবির জন্য বাধ্যতামূলক করা হবে। বাংলা ছবির দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় চলচ্চিত্র জগতের শিল্পী, প্রযোজক ও দর্শকরা একে বাংলা সিনেমার মর্যাদা ফেরানোর লড়াইয়ের বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

অভূতপূর্ব অগ্রিম বুকিং
মুক্তির এক সপ্তাহ আগেই অগ্রিম বুকিং খোলার পর থেকেই টিকিট বিক্রি বেড়েছে হু হু করে। এমনকি অনেক হল মালিক হিন্দি ছবি সরিয়ে ‘ধূমকেতু’র অতিরিক্ত শো দিচ্ছেন। বাংলা ভাষার ছবির জন্য এই ধরনের অভ্যর্থনা সাম্প্রতিক কালে বিরল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Advertisements

বাংলা সিনেমার ভবিষ্যৎ
নির্মাতার মতে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো ছবি তৈরি করতেই হবে। বিষয় নির্বাচন থেকে শুরু করে নির্মাণের প্রতিটি ধাপে দর্শকদের রুচি ও প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিতে হবে। হলে গিয়ে টিকিট কেটে ছবি দেখার অভ্যাস ফিরিয়ে আনতে হবে। আর প্রযোজক, পরিচালক ও হল মালিকদের একসঙ্গে কাজ করে বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ ফেরানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

১৪ আগস্টের প্রতীক্ষা
সবশেষে, ১৪ আগস্ট ভোর ২টা থেকে শুরু হবে দেব-শুভশ্রীর নতুন যাত্রা। পুজোর আগেই মুক্তি পেতে চলা ‘ধূমকেতু’ নিয়ে আশা, উত্তেজনা ও আবেগ—সব মিলিয়ে এবার সিনেমার যুবভারতী পূর্ণ থাকবে দর্শকে। দশ বছরের এই যাত্রা শুধুমাত্র একটি ছবির মুক্তি নয়, বরং বাংলা সিনেমার নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলেই মনে করা হচ্ছে।