সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে বিলাওয়ালের হুমকির কড়া জবাব দিলেন মিঠুন

অভিনেতা এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun) পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি নিয়ে ভারতকে দেওয়া সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারির তীব্র…

Mithun criticizes Lakshmir Bhandar

অভিনেতা এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun) পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি নিয়ে ভারতকে দেওয়া সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারির তীব্র নিন্দা করেছেন। কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মিঠুন চক্রবর্তী তীক্ষ্ণ ও ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যের মাধ্যমে জবাব দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “যদি এই ধরনের কথাবার্তা চলতে থাকে এবং আমাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে, তবে একের পর এক ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হবে। আমরা এমন একটি বাঁধ তৈরির কথাও ভেবেছি, যেখানে ১৪০ কোটি মানুষ প্রস্রাব করবে। তারপর আমরা সেই বাঁধ খুলে দেব, আর তাতে সুনামি হবে। আমার পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই। এই কথাগুলো আমি বিলাওয়াল ভুট্টোর উদ্দেশে বলছি।”

   

মিথুন চক্রবর্তীর এই মন্তব্য ১৯৬০ সালের ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এসেছে। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, যিনি ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, সম্প্রতি সিন্ধু সরকারের সংস্কৃতি বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, “যদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্ডাস নদীর উপর হামলার ঘোষণা দেন, তবে তিনি আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং সভ্যতার উপর হামলা করবেন।

পাকিস্তানের জনগণ যুদ্ধের ক্ষেত্রে মোদীকে মোকাবিলা করার শক্তি রাখে।” তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ হলে পাকিস্তান তাদের ছয়টি নদী পুনরুদ্ধার করবে।

ভারত এই চুক্তিটি গত এপ্রিল মাসে পাহালগামে একটি সন্ত্রাসী হামলার পর স্থগিত করেছিল, যাতে ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে ভারত এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি পুনরায় সক্রিয় করবে না, কারণ পাকিস্তান “শান্তি ও অগ্রগতি”র জন্য এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।

মিঠুন চক্রবর্তীর এই উত্তপ্ত মন্তব্য এক্স প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “মিঠুন চক্রবর্তী বিলাওয়াল ভুট্টোর যুদ্ধের হুঁশিয়ারির জবাবে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলেছেন। এটি ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।” আরেকটি পোস্টে বলা হয়েছে, “মিঠুনের বক্তব্য ব্যঙ্গাত্মক হলেও ভারতের কঠোর অবস্থান প্রতিফলিত করে।” তবে, কিছু ব্যবহারকারী মনে করেন যে এই ধরনের মন্তব্য উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ইন্ডাস নদী ব্যবস্থার জল বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। এই চুক্তি অনুসারে, ইন্ডাস, ঝিলাম এবং চেনাব নদীর জলের বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের হাতে থাকে, যেখানে ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকে সিন্ধু নদী ব্যবস্থার পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলি।

Advertisements

ভারতের চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য জল নিরাপত্তার উপর হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিলাওয়াল ভুট্টো এই সিদ্ধান্তকে পাকিস্তানের ইতিহাস ও সংস্কৃতির উপর হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বিলাওয়াল ভুট্টো ছাড়াও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ইন্ডাস ওয়াটার ট্রিটি নিয়ে ভারতকে হুমকি দিয়েছেন। তিনি ফ্লোরিডার টাম্পায় একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে বলেছেন, “যদি ভারত বাঁধ তৈরি করে, তবে আমরা দশটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তা ধ্বংস করে দেব।”

তিনি আরও দাবি করেছেন যে পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তি এবং প্রয়োজনে তাদের অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় এই হুমকির জবাবে বলেছে, ভারত কোনও পারমাণবিক ভীতির কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মিঠুন চক্রবর্তীর এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সংবেদনশীল প্রকৃতিকে আরও স্পষ্ট করেছে। ইন্ডাস জলচুক্তি নিয়ে উত্তেজনা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছে। মিথুনের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের উল্লেখ এবং ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য ভারতের কঠোর অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।

একযোগে ১৫ স্থানে অভিযান, অবৈধ তহবিলের হদিশ পেল ইডি

তবে এটি কূটনৈতিক সমাধানের পথে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই পরিস্থিতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতার জন্য কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।