নির্বাচন কমিশনে মুখে কুলুপ সংসদে, ওয়াকআউট বিরোধীদের

সংসদে ওয়াকউট করল বিরোধীরা (Election Commission)। বিরোধী দলগুলির ওয়াকআউটের ঘটনায় কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্লা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা সংসদ থেকে বেরিয়ে…

Election Commission

সংসদে ওয়াকউট করল বিরোধীরা (Election Commission)। বিরোধী দলগুলির ওয়াকআউটের ঘটনায় কংগ্রেস সাংসদ রাজীব শুক্লা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা সংসদ থেকে বেরিয়ে এসেছি কারণ, খড়গে জি বলেছেন, সংসদে জাল ভোটার এবং প্রকৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে কোনও আলোচনা হচ্ছে না।

আমরা এই সমস্ত অত্যাচার নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলাম। সরকার নির্বাচন কমিশনের ‘ফার্জিওয়াড়া’ নিয়ে কোনও আলোচনা করছে না। এই কারণে আমরা ওয়াকআউট করেছি।” এই ঘটনা সংসদে চলতে থাকা অধিবেশনে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সরকারের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে আরও স্পষ্ট করেছে। এই ওয়াকআউট নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

   

সংসদের চলমান অধিবেশনে বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে কংগ্রেস, নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলেছে। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন জাল ভোটারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং প্রকৃত ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে সংসদে এই বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিলেন, কিন্তু সরকার এই বিষয়ে কোনও আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। ফলে, কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাজীব শুক্লা এক্স প্ল্যাটফর্মে তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনের ফার্জিওয়াড়া এবং ভোটার তালিকায় অত্যাচারের বিষয়ে সরকারের নীরবতা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।”

বিরোধী দলগুলি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তাদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পক্ষে কাজ করছে এবং ভোটার তালিকায় হেরফেরের মাধ্যমে বিরোধী দলগুলির সমর্থকদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। রাজীব শুক্লা বলেছেন, “জাল ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নামে প্রকৃত ভোটারদের নাম কাটা হচ্ছে।

এটি গণতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।” বিরোধী দলগুলি আরও অভিযোগ করেছে যে, নির্বাচন কমিশন দুর্নীতিগ্রস্ত নির্বাচনী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলগুলি এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বারবার দাবি জানিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে সংসদে বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করা জরুরি। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।”

তবে, সরকার এই বিষয়ে আলোচনা এড়িয়ে গেছে, যা বিরোধী দলগুলির ক্ষোভ বাড়িয়েছে। ফলে, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদরা সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেছেন। এই প্রতিবাদের মাধ্যমে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

Advertisements

এক্স প্ল্যাটফর্মে এই ওয়াকআউট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বিরোধী দলগুলির এই পদক্ষেপকে গণতন্ত্রের জন্য একটি সাহসী প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “বিরোধী দলগুলি সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ফার্জিওয়াড়া নিয়ে আলোচনা না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে।”

তবে, কেউ কেউ মনে করছেন, ওয়াকআউটের পরিবর্তে সংসদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা উচিত ছিল। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “ওয়াকআউট করে সমস্যার সমাধান হবে না। বিরোধীদের সংসদে থেকে সরকারকে চাপ দেওয়া উচিত।”

এই ওয়াকআউট সরকার এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, বিরোধী দলগুলি সংসদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এক বিজেপি নেতা বলেছেন, “বিরোধীরা শুধু রাজনৈতিক নাটক করছে। নির্বাচন কমিশন তার কাজ স্বাধীনভাবে করছে।”

অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি দাবি করেছে যে, সরকার নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকে দুর্বল করছে। এই ঘটনা আগামী নির্বাচনগুলিতে বিরোধী দলগুলির প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকলেব মমতা, বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

সংসদ থেকে বিরোধী দলগুলির ওয়াকআউট নির্বাচন কমিশনের কার্যকলাপ এবং সরকারের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। রাজীব শুক্লার বক্তব্য এই ঘটনার গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করেছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার বিষয়ে বিরোধী দলগুলির এই প্রতিবাদ গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কীভাবে এই অভিযোগের জবাব দেয়, তা আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলবে।