নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে (vegetable price) গেলেই এখন যেন গরম হাওয়া লাগে। একদিকে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে শহর-গ্রাম, অন্যদিকে সবজির দাম বাড়তে বাড়তে মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ডিম ও পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম। ফলে রোজকার বাজার করতে গিয়ে ক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্রমেই গভীর হচ্ছে।
শহরের বড় বাজার হোক বা পাড়ার ছোট হাট, সর্বত্রই একই চিত্র। আলু, পটল, ঝিঙে, বেগুন, ঢেঁড়স, করলা—সব ধরনের সবজির দাম গত এক মাসে গড়ে ১৫-২০ টাকা (vegetable price) কেজি বেড়েছে। ঢেঁড়স, ঝিঙে, পটল—প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা ছাড়া মিলছে না। বেগুনও কম নয়, ৭০-৮০(vegetable price) টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলার দাম ৮০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে অনেক জায়গায়।
এবার ডিমের কথা বলি। এক ডজন ডিমের দাম এখন ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। পেঁয়াজের অবস্থাও একই রকম। বর্ষার শুরুতে এবং সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম একলাফে বেড়ে এখন ৫০-৫৫ টাকা কেজি। খুচরো বিক্রেতারা বলছেন, মহারাষ্ট্র ও কর্নাটকের কিছু এলাকায় ফসলের ক্ষতির কারণে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর ফলে পরিবহন খরচও বেড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত গিয়ে ভোক্তার পকেটেই চাপ ফেলছে।
বাজারে গিয়ে কথা বললে দেখা যায়, সাধারণ গৃহিণীরা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। “আগে ৫০০ টাকায় সাপ্তাহিক বাজার হয়ে যেত, এখন ৮০০-৯০০(vegetable price) টাকাও কম পড়ে যাচ্ছে,” অভিযোগ এক ক্রেতার। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, তাঁদেরও কিছু করার নেই। পাইকারি বাজার থেকেই দামের চাপ আসছে, তাই খুচরো বাজারে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই সময় মৌসুমি পরিবর্তনের কারণে সবজির উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। বর্ষার অনিয়মিত বৃষ্টি এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রা ফসলের ক্ষতি করে। তার ওপর পরিবহন ও জ্বালানির খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম আরও চড়া হয়।
সরকারি মহল যদিও আশ্বাস দিচ্ছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কিছুটা কমতে পারে। ইতিমধ্যেই কিছু জায়গায় আমদানি বাড়ানো হয়েছে এবং হিমঘরে মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়া শুরু হয়েছে। তবে অভিজ্ঞ ক্রেতারা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি প্রায়ই দেখা যায়, কিন্তু দাম একবার বাড়লে তা কমতে সময় লাগে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের বাজারযাত্রা যেন একপ্রকার পরীক্ষা। পকেট সামলাতে অনেকেই এখন বিকল্প পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন—যেমন ডিমের বদলে সয়াবিন, বা দামি সবজির বদলে সস্তা শাকপাতা। কিন্তু তাতেও স্বস্তি আসছে না পুরোপুরি। আগামী দিনে সরবরাহ কেমন থাকে এবং বর্ষার শেষের ফসল কতটা ভালো হয়, তার উপরই নির্ভর করছে বাজারের হাল।
এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, মধ্যবিত্তের রান্নাঘরে সাশ্রয়ের তালিকা আরও বড় হতে বাধ্য। আর ক্রেতারা আশা করছেন, সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যাতে বাজারে অন্তত কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। এখনকার বাজারে ঢুকলেই যে গরম হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পকেটেও গরম অনুভূত হচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।