মুনিরকে ট্রাম্পের ‘মেহেরবানি’! বালোচ গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসবাদী তকমা ওয়াশিংটনের

ওয়াশিংটন: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের আমেরিকা সফর যেন কূটনৈতিক বড়সড় প্রাপ্তি এনে দিল ইসলামাবাদকে। মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী…

মুনিরকে ট্রাম্পের ‘মেহেরবানি’! বালোচ গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসবাদী তকমা ওয়াশিংটনের

ওয়াশিংটন: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের আমেরিকা সফর যেন কূটনৈতিক বড়সড় প্রাপ্তি এনে দিল ইসলামাবাদকে। মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মুনিরের দ্বিতীয় মার্কিন সফরের সময় এই ঘোষণাই তাঁর জন্য বড় এক কূটনৈতিক জয় (Pakistan BLA Terrorist Designation)।

বিএলএ এবং তাদের সহযোগী ‘মাজিদ ব্রিগেড’ পাকিস্তানে একাধিক হামলার পিছনে ছিল, বিশেষত সেনাবাহিনীকে নিশানা করে। তবে ঘোষণার সময়টাই নজর কেড়েছে, মুনির যুক্তরাষ্ট্রে সফরে থাকাকালীন এই সিদ্ধান্ত আসে। এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জম্মু-কাশ্মীরের পাহালগাম হামলার দায় স্বীকার করা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-কেও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিল এবং স্পষ্ট জানিয়েছিল, টিআরএফ আসলে লস্কর-ই-তইবার ছদ্মনাম ও প্রক্সি সংগঠন, যেটিকে পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই ‘অচল’ বলে দাবি করে আসছে।

   

বিএলএ-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ঘোষণার ফলে এর জন্য আর্থিক বা লজিস্টিক সহায়তা দেওয়া অপরাধ বলে গণ্য হবে। পাকিস্তান বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে, ভারত নাকি বিএলএ-কে সহায়তা দিচ্ছে, যদিও কোনও প্রমাণ কখনও পেশ করতে পারেনি।

মুনিরের মার্কিন সফর ও ‘পারমাণবিক হুমকি’

মুনিরের এই সফরে পাকিস্তান–মার্কিন সম্পর্কের উষ্ণতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। মার্কিন মাটিতেই তিনি ভারতবিরোধী পারমাণবিক হুমকি দেন, “আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি মনে করি আমরা ডুবে যাচ্ছি, তবে অর্ধেক বিশ্বকে নিয়ে ডুবব।” এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক, “বন্ধুত্বপূর্ণ তৃতীয় দেশের মাটি থেকে এমন মন্তব্য দুঃখজনক।”

Advertisements

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের এই উষ্ণতাকে ঘিরে বিতর্কও কম নয়। জুন মাসে মুনির ও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বৈঠকের পর থেকে পাকিস্তান একাধিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়েছে-তেলের মজুদ উন্নয়ন প্রকল্প, শুল্ক হ্রাসসহ নানা চুক্তি। মুনিরের প্রশংসায় ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার প্রস্তাবও দেন তিনি।

পেন্টাগন সতর্কবার্তা

তবে সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন সতর্ক করেছেন, “আসিম মুনির আসলে স্যুট পরা ওসামা বিন লাদেন। পাকিস্তানকে যতই ছাড় দেওয়া হোক না কেন, তার বা পাকিস্তানের ক্ষমতাশালী এলিটদের আদর্শ বদলাবে না।”

এখন প্রশ্ন, এই নতুন ‘বন্ধুত্ব’ কি দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্য আরও বদলে দেবে, নাকি পাকিস্তানের অস্থিরতাকে আরও উসকে দেবে?