বঙ্গে দীর্ঘ বাম শাসনে অল্প বিস্তর চেষ্টা হলেও আন্দামান-নিকোবর (Andaman Nicobar) দ্বীপপুঞ্জে তেমন একটা বাড়েনি সিপিআইএম। অথচ বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাাদের মধ্যে বাংলাভাষীদের সংখ্যা কম নন। দীর্ঘ সময় মাটি কামড়ে পড়ে থেকে আরএসএস সংগঠন বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি থাকার সময় আন্দামান ও নিকোবরের নিজের সাংগঠনিক তৎপরতার বিষয়টি বারবার আলোচনায় এনেছেন। আর সেখানেই যেন গোকুলে বেড়েছে সিপিআইএম!
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবরে রাস্তায় বিরাট সংখাক মানুষের লাল পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে চমকে গেছে সংঘ পরিবার। রাজধানী শহর পোর্ট ব্লেয়ারে হওয়া এই বিক্ষোভ সমাবেশের মূল ইস্যু বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
সিপিআইএম আন্দামান-নিকোবর স্টেট কমিটি জানিয়েছে,পোর্ট ব্লেয়ারের ফিনিক্স বে-তে বিদ্যুৎ বিভাগে সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ারের কার্যালয়ের সামনে বিশাল বিক্ষোভ সভার আয়োজন করা হয়। পোর্ট ব্লেয়ার ও দক্ষিণ আন্দামানের আশেপাশের গ্রামীণ এলাকায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ।
বিক্ষোভ সভার উদ্বোধন করে সিপিআইএম আন্দামান ও নিকোবর সংগঠনের সম্পাদক ডি. আইয়্যাপন। তিনি বলেছেন, এই দ্বীপপুঞ্জের বিদ্যুৎ খাতে মোদী সরকারের অবৈজ্ঞানিক ও ভুল নীতির ফলে বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী, নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিরা। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রে মোদী সরকারের ১১ বছরের শাসনে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিদ্যুৎ পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে।
আন্দামান-নিকোবর সিপিএম নেতা ডি. লক্ষ্মণ রাও জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তির বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। অভিযোগ, দ্বীপপুঞ্জের সংসদ সদস্য জনগণের সমস্যা সমাধানে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছেন। বিক্ষোভে পোর্ট ব্লেয়ার সিটি আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক পি. সত্যপাল গত নির্বাচনে বিজেপির দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুরণ হয়নি বলে জানান।
আন্দামাম-নিরোবরের বিদ্যুৎ সংকট ইস্যু নিয়ে সম্প্রতি সিপিআইএম-এর তামিলনাড়ুর সাংসদ আর. সচিথানান্থমের দেখা করেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে। বৈঠকে বাম সাংসদ বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে দ্বীপে আরও ডিজেল জেনারেটর পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিদ্যুৎ মন্ত্রী তা সঙ্গে সঙ্গে খারিজ করে দেন, কারণ দ্বীপে ডিজেল উৎপাদনের খরচ অত্যন্ত বেশি।
উল্লেখ্য, আন্দামান-নিকোবরে তামিলভাষীর সংখ্যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আর তামিলনাড়ু সরকারে শরিক দল সিপিআইএম। দলটির তামিলনাড়ু রাজ্য কমিটি দীপপুঞ্জে সংগঠন ছড়াতে জোর দিয়েছে।