পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির (Munir) জুন মাসের পর দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)-এর বিবৃতি অনুযায়ী, এই সফরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
পাকিস্তানি প্রবাসীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। এই সফরটি ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক চার দিনের সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এবং পাকিস্তান-মার্কিন সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়।
আইএসপিআর-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুনির ফ্লোরিডার টাম্পায় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর বিদায়ী কমান্ডার জেনারেল মাইকেল ই. কুরিলার অবসর গ্রহণ অনুষ্ঠানে এবং নতুন কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপারের দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। মুনির জেনারেল কুরিলার নেতৃত্ব এবং দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা জোরদারে তাঁর অবদানের প্রশংসা করেছেন।
অ্যাডমিরাল কুপারের সঙ্গে অভিন্ন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া, তিনি মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের সঙ্গে বৈঠকে পেশাগত পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তাঁকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এই সফরের পাশাপাশি, মুনির মিত্র দেশগুলির প্রতিরক্ষা প্রধানদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছেন। তিনি পাকিস্তানি প্রবাসীদের সঙ্গে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশনে পাকিস্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা রাখার এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। প্রবাসীরা পাকিস্তানের অগ্রগতি ও উন্নয়নে অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
এটি মুনিরের দ্বিতীয় মার্কিন সফর, যা গত জুন মাসে তাঁর পাঁচ দিনের সফরের পরে হয়েছে। জুন মাসে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে একটি ব্যক্তিগত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিয়েছিলেন, যা সাধারণত রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের জন্য সংরক্ষিত একটি অভূতপূর্ব অঙ্গভঙ্গি ছিল।
সেই বৈঠকের ফলে ট্রাম্প বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তেল চুক্তির মাধ্যমে মার্কিন-পাকিস্তান সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। এক্স-এ পোস্টে বলা হয়েছে, এই সফর পাকিস্তানের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ, যেখানে তারা দুটি পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
তবে, এই সফর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য। গত জুনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতের পর এই সফরটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এক্স-এ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্প ভারতের সফল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে, এই দাবিগুলি যাচাই করা যায়নি।এই সফর পাকিস্তান-মার্কিন সামরিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের গভীরতা তুলে ধরেছে।
এসি লোকালের উদ্বোধনে তৃণমূলের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন সুকান্ত
মার্কিন জেনারেল গত মাসে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় ‘অসাধারণ অংশীদার’ এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদানকারী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই সফরের মাধ্যমে পাকিস্তান তার নৌ ও স্থল নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। আগামী দিনে এই সফরের ফলাফল এবং পাকিস্তান-মার্কিন সম্পর্কের দিকে সবার নজর থাকবে।