৩০ দিনের মধ্যে ITR ভেরিফাই না করলে কী হবে? জেনে নিন নিয়ম

কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (CBDT) করদাতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের পর সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে তা…

ITR Filing Deadline

কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (CBDT) করদাতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের পর সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে তা ভেরিফাই (ITR verification) করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই ভেরিফিকেশন সম্পন্ন না হলে, রিটার্নটি বাতিল বলে গণ্য হবে। এর ফলে করদাতাকে সম্ভাব্য জরিমানা, প্রসেসিং বিলম্ব, এমনকি কর সুবিধা হারানোর মতো সমস্যার মুখোমুখি হতে হতে পারে।

   

আয়কর বিল ২০২৫-এ নতুন খসড়ায় ৫টি বড় পরিবর্তন জেনে নিন

আগে এই সময়সীমা ছিল ১২০ দিন, তবে ১ আগস্ট, ২০২২ থেকে তা কমিয়ে ৩০ দিনে আনা হয়েছে। আয়কর দাখিল সঠিকভাবে এবং সময়মতো করলেও, নির্ধারিত সময়ে ভেরিফিকেশন না করলে তা প্রত্যাখ্যান হয়ে যাবে। এর ফলে, আয়কর আইন ১৯৬১-এর ২৩৪এফ ধারায় জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন করদাতারা।

কেন জরুরি এই ই-ভেরিফিকেশন?

ই-ভেরিফিকেশন আয়কর দাখিল প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ। এর মাধ্যমে করদাতা নিশ্চিত করেন যে তার দাখিল করা রিটার্ন সঠিক এবং অনুমোদিত। এই ধাপটি সম্পন্ন না করলে আয়কর দপ্তর রিটার্ন প্রসেস করতে পারে না। ফলে, ট্যাক্স রিফান্ড পাওয়া বা অন্যান্য কর-সংক্রান্ত সুবিধা বিলম্বিত হয়, এমনকি বাতিলও হতে পারে।

অনলাইনে কীভাবে ITR ভেরিফাই করবেন?

করদাতাদের সুবিধার্থে আয়কর বিভাগ একাধিক অনলাইন পদ্ধতি চালু করেছে—
1. আয়কর ই-ফাইলিং পোর্টালে লগইন:
ওয়েবসাইট: incometax.gov.in
‘e-Verify Return’ অপশন সিলেক্ট করুন।
এখানে প্যান (PAN), নির্দিষ্ট মূল্যায়ন বছর (Assessment Year 2025-26) এবং অ্যাকনলেজমেন্ট নম্বর দিতে হবে।

2. লগইন করে সরাসরি ভেরিফিকেশন:
প্যান ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
“My Account” এ গিয়ে “e-Verify Return” বেছে নিন।
পেন্ডিং রিটার্ন দেখা যাবে।
‘e-Verify’ বাটনে ক্লিক করে ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশন কোড (EVC) বা আধার ওটিপি দিয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।

Advertisements

3. Aadhaar OTP পদ্ধতি:
আধার কার্ড মোবাইল নম্বরে লিঙ্ক করা থাকতে হবে।
ওটিপি দিয়ে সহজেই ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করা যায়।

4. EVC পদ্ধতি:
প্রি-ভ্যালিডেটেড ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশন কোড ব্যবহার করে।
নেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন:
অন্য একটি সুবিধাজনক উপায় হলো আপনার নেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে লগইন করে ‘e-Verify ITR’ সেকশনে গিয়ে ভেরিফিকেশন করা। বেশিরভাগ ব্যাংক এই সুবিধা দিয়ে থাকে।
অফলাইনে ভেরিফিকেশন:
যারা অফলাইনে করতে চান, তারা ITR-V ফর্ম প্রিন্ট করে, সই করে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে ডাকযোগে পাঠাতে পারেন—
ঠিকানা:
Centralised Processing Centre (CPC)
Income Tax Department
Bengaluru – 560500, Karnataka
স্পিড পোস্ট বা সাধারণ ডাক—দুই উপায়েই পাঠানো যায়।
তবে স্পিড পোস্টে পাঠালে, সিবিডিটি ৩০ দিনের সময়সীমা গণনা করবে যে তারিখে সিপিসি অফিসে ফর্মটি পৌঁছেছে, সেই তারিখ থেকে।

সময়সীমা অমান্য করলে কী হবে?

৩০ দিনের মধ্যে ভেরিফিকেশন না করলে—
রিটার্ন বাতিল বলে গণ্য হবে।
সম্ভাব্য জরিমানা (Section 234F অনুযায়ী ১,০০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত) দিতে হতে পারে।
রিফান্ড প্রসেস বন্ধ হয়ে যাবে।
ট্যাক্স সুবিধা ও ছাড় হারাতে হতে পারে।

কর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

ট্যাক্স পরামর্শকরা বলছেন, অনেক করদাতা এখনো ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেন না, যার ফলে তাদের রিটার্ন প্রত্যাখ্যাত হয়। অনলাইন ভেরিফিকেশন এখন মাত্র কয়েক মিনিটের বিষয়, তাই দাখিলের দিনই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা সবচেয়ে ভালো।
সময়সীমা: দাখিলের ৩০ দিনের মধ্যে।
পদ্ধতি: অনলাইন (Aadhaar OTP, EVC, নেট ব্যাংকিং), অফলাইন (ITR-V ডাকযোগে পাঠানো)।
ফলাফল: ভেরিফিকেশন না করলে রিটার্ন বাতিল ও জরিমানা।

করদাতাদের জন্য বার্তা একটাই—রিটার্ন দাখিলের পর ভেরিফিকেশন করতে ভুলবেন না। এই সামান্য ধাপেই নির্ধারিত হবে আপনার কর প্রক্রিয়া কতটা মসৃণ ও ঝামেলাহীন হবে।