তেলেঙ্গানায় তফসিলি সংরক্ষণে বিজেপির বাঁধায় বিস্ফোরক কংগ্রেস

কংগ্রেস দল রবিবার অভিযোগ করেছে যে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) তেলেঙ্গানায় (Telangana)তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ ৬৭ শতাংশে বৃদ্ধি করার বিলটিকে…

jairam ramesh slams BJP in Telangana resevation

কংগ্রেস দল রবিবার অভিযোগ করেছে যে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) তেলেঙ্গানায় (Telangana)তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ ৬৭ শতাংশে বৃদ্ধি করার বিলটিকে আইন হিসেবে কার্যকর হতে বাধা দিচ্ছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ দাবি করেছেন যে, এই বিলটি গত চার মাসেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতির সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছে।

তিনি বলেন, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে এই বিলের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।জয়রাম রমেশ এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর বিহার বিধানসভা তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি, ওবিসি এবং ইবিসি-র জন্য সংরক্ষণ ৬৫ শতাংশে বৃদ্ধি করার বিল পাস করে। বিধান পরিষদ ১০ নভেম্বর এটি পাস করে, এবং রাজ্যপালের সম্মতি পাওয়ার পর ২১ নভেম্বর এটি আইন হিসেবে কার্যকর হয়।”

   

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “তেলেঙ্গানা বিধানসভা ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ ৬৭ শতাংশে (যার মধ্যে ৪২ শতাংশ পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য) বৃদ্ধি করার বিল পাস করে। বিধান পরিষদ পরের দিন এটি পাস করে। ৩০ মার্চ, রাজ্যপাল বিলটি রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠান। চার মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সম্মতি এখনও মেলেনি।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে বিহারে এই ধরনের বিল দ্রুত আইন হয়ে যায়, কারণ তৎকালীন জেডি(ইউ), আরজেডি এবং কংগ্রেস সরকারের সময় বিহারের সামাজিক বাস্তবতার কারণে বিজেপি রাজ্যপালকে বিল বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। তবে তেলেঙ্গানায় বিজেপি বাধা সৃষ্টি করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “চার মাসেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রপতির সম্মতি কেন আটকে আছে?”

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ. রেবন্ত রেড্ডি গত বুধবার দিল্লির জন্তর মন্তরে একটি ধরনার নেতৃত্ব দেন, যেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির সম্মতির দাবিতে প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, “যদি এই বিল দুটি অনুমোদন না পায়, তবে প্রমাণ হবে যে বিজেপি পশ্চাদপদ শ্রেণির বিরুদ্ধে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ভারত জোড়ো যাত্রার সময় রাহুল গান্ধী তেলেঙ্গানার জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে কংগ্রেস সরকার গঠনের পর জাতি গণনা করে ৪২ শতাংশ সংরক্ষণ প্রদান করবে। এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে জনগণ কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছে।”

Advertisements

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বিলটির সম্মতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “তেলেঙ্গানা সরকার এবং কংগ্রেস আজ দিল্লিতে ধরনা দিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে শিক্ষা, চাকরি এবং স্থানীয় সরকারে ৪২ শতাংশ সংরক্ষণের আইনের সম্মতি দাবি করে। এই আইন সংবিধানের সামাজিক ন্যায়ের দৃষ্টিভঙ্গির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।”

বিজেপি নেতা কাসাম ভেঙ্কটেশ্বরলু কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, কংগ্রেস তেলেঙ্গানায় পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য ৪২ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং সংবিধানের নবম তফসিলের অধীনে ধর্মভিত্তিক সংরক্ষণ অনুমোদিত নয়। তিনি দাবি করেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য কোটা বরাদ্দ করে পশ্চাদপদ শ্রেণির জন্য প্রকৃত সংরক্ষণ ৩২ শতাংশে নেমে আসবে।

তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি বিজেপি এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-কে একত্রে কাজ করে ৪২ শতাংশ সংরক্ষণ বাস্তবায়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, বিজেপি মুসলিম সংরক্ষণের অজুহাতে বিলটি আটকে দিচ্ছে।

আখালের পাশাপাশি এবার কিস্তোয়ারেও সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ শুরু!

এই বিলটি তেলেঙ্গানার জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এটি রাজ্যের জাতি গণনার ভিত্তিতে সংরক্ষণ বৃদ্ধির প্রথম উদাহরণ। তবে, রাষ্ট্রপতির সম্মতির অভাবে এটি এখনও আইন হয়ে উঠতে পারেনি, যা রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।