আজ ডুরান্ডের গ্রুপ বিভাগের অন্তিম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল হোসে মোলিনার ছেলেরা (Mohun Bagan )। যেখানে তাঁদের প্রতিপক্ষ ছিল আইলিগের নতুন দল ডায়মন্ড হারবার এফসি। শেষ পর্যন্ত চারটি গোলের ব্যবধানে সেই ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেয় বিশাল কাইথরা। সিজনের প্রথম ম্যাচে নেমেই গোল করেছেন জেমি ম্যাকলারেন এবং জেসন কামিন্স। এছাড়াও দাপটের সাথে মাঠে খেলতে দেখা গিয়েছিল ভারতীয় ফুটবলারদের। নতুন মরসুমের প্রথমদিকেই দলের এমন বড় ব্যবধানে জয় নিঃসন্দেহে খুশি করেছে সকল সমর্থকদের। তবে এদিন মাঠের পাশাপাশি মাঠের বাইরে ও ব্যাপকভাবে নজর কেড়েছে সবুজ-মেরুন গ্যালারি।
যেখানে মোহনবাগান দলের পাশাপাশি বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে বাংলা ও বাঙালির গৌরবের কথা উঠে আসে ব্যাপকভাবে। সপ্তাহ কয়েক আগেই এই বাংলা ভাষা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন দেশের এক রাজনৈতিক নেতা। এমনকি একটা সময় দিল্লি পুলিশের তরফে ও বাংলা ভাষাকে বাংলাদেশী ভাষা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। সেই সকল মন্তব্যের প্রতিবাদ এবার আছড়ে পড়ল কিশোর ভারতীর বুকে। সমর্থকদের তরফে যে সমস্ত টিফো মাঠে আনা হয়েছিল সেগুলিতে লেখা রয়েছে “বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা–সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান।” সেই সাথে বাংলা তথা ভারতবর্ষের সমাজ সংস্কারকদের পাশাপাশি একাধিক স্বাধীনতার সংগ্রামীর ছবিও দেখা যায় সেই টিফোতে।
এছাড়াও একটি ছোট টিফোতে লেখা রয়েছে “বাংলা আমার মায়ের ভাষা আমার ধাত্রীভূমি আমরা মোহনবাগানী।” পাশাপাশি সকলের নজর কাড়ছিল একটি ব্যানার। যেখানে লেখা ছিল ” জন গন মন বন্দেমাতরম। বাংলা ভাষা মায়ের সমান।” পাশাপাশি আরেকটি ব্যানারে লেখা ছিল ” শহীদের রক্ত। কবির নোবেল। ভারতের মুকুটে বাংলা জুয়েল।” তবে এটাই প্রথম নয়। কিছুদিন আগেই যুবভারতীতে ডুরান্ড কাপের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল ফুটবল দল। তাঁদের সমর্থকদের ব্যানার ও রীতিমতো মন জয় করেছিল বাংলার সকল মানুষদের। পূর্বে ও একাধিকবার নানা অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলতে দেখা গিয়েছিল লাল-হলুদের পাশাপাশি সবুজ-মেরুন সমর্থকদের।
আগের বছর আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি উঠে এসেছিল ময়দানের ফুটবলপ্রেমীদের তরফে। এবার ও সেই একই ছবি। তবে এবার বিষয়বস্তু হিসেবে রয়েছে বাংলা ভাষায় গুরুত্ব। আসলে সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করেছে ব্যাপকভাবে। যা নিয়ে রীতিমতো সরগরম দেশের রাজ্য রাজনীতি। বাংলার মানুষদের প্রতি হয়ে আসা অত্যাচার ও বাংলা ভাষার অবমাননা সকলের মধ্যে যে ক্ষোভ জমতে শুরু করেছিল তাঁরই সাক্ষী থাকল বাংলার দুই স্টেডিয়াম।
তবে সেখানেই সমস্ত কিছু সীমাবদ্ধ নয়। বাংলা ভাষার পাশাপাশি ভারতীয় ক্লাব ফুটবলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও এআইএফএফ এবং ইন্ডিয়ান সুপার লিগ আয়োজককারী সংস্থা তথা এফএসডিএলের মধ্যে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে সেই নিয়েও বিশেষ টিফো নামানো হয়েছিল মোহনবাগান গ্যালারি থেকে।