অপারেশন ‘সিঁদুর’-এ ৬ যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত, দাবি বায়ুসেনা প্রধানের

ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং শনিবার অপারেশন ‘সিঁদুর’ নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করলেন। বেঙ্গালুরুর এয়ার চিফ মার্শাল এল.এম. কাত্রে স্মারক বক্তৃতায় তিনি…

অপারেশন ‘সিঁদুর’-এ ৬ যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত, দাবি বায়ুসেনা প্রধানের

ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং শনিবার অপারেশন ‘সিঁদুর’ নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করলেন। বেঙ্গালুরুর এয়ার চিফ মার্শাল এল.এম. কাত্রে স্মারক বক্তৃতায় তিনি জানান, ভারতের এয়ার ডিফেন্স সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম পাকিস্তানের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি এএইডব্লিউঅ্যান্ডসি (AEW&C) / এলিন্ট (ELINT) বিমান ভূপাতিত করে, যা আকাশপথে নজরদারি ও আগাম সতর্কবার্তার জন্য ব্যবহৃত হয় (6 Pak jets shot down in Op Sindoor)।

তিনি জানান, পাকিস্তানের জ্যাকোবাবাদ ঘাঁটিতে পার্ক করা কিছু এফ-১৬ ধ্বংস করা হয় এবং ভোলারিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একটি এএইডব্লিউঅ্যান্ডসি বিমান। এই হামলার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করা হয়েছিল ৭ মে পাহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধে ভারতের পাল্টা আঘাতের আগে থেকেই। ক্ষয়ক্ষতির নির্ভুলতা যাচাই করা হয়েছে স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বে এই নজরদারি বিমান ভূপাতিত করা হয়, যা ভারতের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ-পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার ‘কিল’।

   

বায়ুসেনা প্রধান আরও জানান, ভারতীয় হামলায় বহু জঙ্গি নিহত হওয়ার সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, “বালাকোটে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, তা দেশবাসীকে বোঝাতে সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই ‘বালাকোটের ভূত’ আমরা সরিয়ে দিতে পেরেছি বিশ্বকে দেখাতে পেরেছি, আমরা কী অর্জন করেছি।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, এ সাফল্যের পেছনে ছিল রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পরিষ্কার নির্দেশনা, কোনওরকম সীমাবদ্ধতা ছিল না।

কীভাবে টার্গেট বেছে নেওয়া হয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “শুধু লঞ্চপ্যাড নয়, সন্ত্রাসবাদী নেতৃত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানানোই ছিল উদ্দেশ্য। আটটি সংস্থা ও তিন বাহিনী একযোগে পরিকল্পনা করেছিল। নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়, যার মধ্যে বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকের সদর দপ্তরও ছিল।” তিনি আরও জানান, সদ্য কেনা এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই যুদ্ধে ‘গেম-চেঞ্জার’ প্রমাণিত হয়েছে, যা পাকিস্তানি বিমানকে ভারতের আকাশসীমা থেকে অনেক দূরে সরিয়ে রেখেছে।

Advertisements

যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েও তিনি সরকারের পাশে দাঁড়ান। পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMO) ১০ মে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণ করা হয়। এ.পি. সিং বলেন, “আমরা যুদ্ধের উদ্দেশ্য পূরণ করেছি-জঙ্গিদের শিক্ষা দেওয়া। লাগাতার যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মাত্র ৮০-৯০ ঘণ্টায় আমরা এত ক্ষতি করেছি যে, পাকিস্তান বুঝে গিয়েছিল, চালিয়ে গেলে আরও বড় মূল্য দিতে হবে।”

প্রতিরক্ষা মহলের মতে, অপারেশন ‘সিঁদুর’-এর এই সাফল্য শুধু সামরিক শক্তির প্রদর্শন নয়, ভারতের কৌশলগত ও রাজনৈতিক দৃঢ়তারও প্রমাণ।