গত দুই দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বারবার স্পষ্ট করে জানিয়ে আসছেন যে, নির্বাচন কমিশন (Election Commission) চারজন অফিসার ও একজন ডেটা এন্ট্রি কর্মীকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিলেও নবান্ন (Nabanna) তা মানতে বাধ্য নয়। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য সরকার কাউকেই সাসপেন্ড করবে না। তবে শুক্রবার নির্বাচন কমিশন ফের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, অবিলম্বে ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং আগামী ১১ আগস্ট বিকেল ৩টার মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট কমিশনে জমা দিতে হবে।
বারুইপুর পূর্ব (১৩৭) এবং ময়না (২০৬) বিধানসভা কেন্দ্রে ফর্ম-৬ আবেদন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেয় কমিশন। ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েছিল—বারুইপুর পূর্বের ইআরও দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী, সহকারী ইআরও তথাগত মণ্ডল, ময়নার ইআরও বিপ্লব সরকার, এআইআরও সুদীপ্ত দাস—এই চারজন অফিসারকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করতে হবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হবে। একই সঙ্গে, ফর্ম-৬ প্রসেসিংয়ে যুক্ত ক্যাজুয়াল ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সুরজিত হালদারের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এই নির্দেশ মুখ্য সচিব মনোজ পন্থের কাছে পাঠানো হয়েছিল।
কমিশনের অভিযোগ, এতদিন কেটে গেলেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও পদক্ষেপের রিপোর্ট জমা পড়েনি। তাই শুক্রবার সচিব সুজিত মিশ্রের স্বাক্ষরে ফের চিঠি পাঠিয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার জেরে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে টানাপোড়েন তীব্র আকার নিয়েছে। রাজ্যের দাবি—কমিশনের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য নয়। অন্যদিকে কমিশনের অবস্থান—রাজ্য সরকারের যেসব অফিসার ডেপুটেশনে কমিশনের কাজে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণ অধিকার কমিশনের আছে। এখন দেখার বিষয়, এই সংঘাত আদালতের দোরগোড়ায় পৌঁছায় কিনা।