শুল্ক-ঝড়ের ধাক্কা! ভারতের অর্ডার বন্ধ করল অ্যামাজন-ওয়ালমার্ট-টার্গেট

নয়াদিল্লি: ভারতের বস্ত্র রফতানি শিল্পে ভয়ানক ধস নামার ইঙ্গিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক নীতির জেরে এক ধাক্কায় স্থগিত হয়ে গেল অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট,…

শুল্ক-ঝড়ের ধাক্কা! ভারতের অর্ডার বন্ধ করল অ্যামাজন-ওয়ালমার্ট-টার্গেট

নয়াদিল্লি: ভারতের বস্ত্র রফতানি শিল্পে ভয়ানক ধস নামার ইঙ্গিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন শুল্ক নীতির জেরে এক ধাক্কায় স্থগিত হয়ে গেল অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট, গ্যাপ-সহ একাধিক মার্কিন জায়ান্টের ভারতীয় অর্ডার (amazon walmart halts order from india)। কূটনৈতিক টানাপোড়েনের ছায়া এবার সরাসরি পড়তে শুরু করেছে ব্যবসার অঙ্কে।

সূত্রের খবর, ৫০ শতাংশের মতো আমদানি শুল্ক বসানোর পরই আমেরিকার বহু সংস্থা ভারতীয় রফতানিকারকদের ইমেল পাঠিয়ে জানিয়েছে, ‘পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত সমস্ত জামাকাপড় ও বস্ত্রজাত পণ্যের আমদানি আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে’। রফতানিকারকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি নজিরবিহীন।

   

এই বাড়তি শুল্কভার বহন করতে অস্বীকার করেছে অ্যামাজন, ওয়ালমার্টের মতো সংস্থাগুলি। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় সরবরাহকারীদেরই এই অতিরিক্ত খরচ সামলাতে হবে। ফলে অনেকের পক্ষেই রফতানি চালিয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠছে।

চড়া ট্যারিফে রফতানি ঝুঁকির মুখে, ক্ষতির অঙ্ক ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত

এই ট্যারিফের কোপে ভারতীয় বস্ত্রপণ্যের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এতে আমেরিকায় রফতানি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। এতে ভারতের বস্ত্র রফতানি খাতে সরাসরি ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় রফতানিকারক সংস্থাগুলি— গোকালদাস এক্সপোর্ট, ইন্দো কাউন্ট, ওয়েলসপান লিভিং, ট্রিডেন্ট-এর মতো সংস্থাগুলির উপরেই আমেরিকান রফতানির ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ নির্ভর করে।

Advertisements

প্রতিযোগিতা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম

ব্যবসায়ী মহলের একাংশের আশঙ্কা, এই ট্যারিফ যুদ্ধের ফাঁকে ভারতের জায়গা দখল করে নিতে পারে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। কারণ, এই দুই প্রতিযোগী দেশের উপরে আমেরিকা তুলনামূলকভাবে কম, মাত্র ২০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপিয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে আমেরিকায় বস্ত্র রফতানিতে ভারতের অংশীদারি প্রায় ২৮ শতাংশ। সেই জায়গা যদি সরে যায় বাংলাদেশ বা ভিয়েতনামের দিকে, তাহলে তা কেবল অর্থনীতির নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-নৈতিকতার দিক থেকেও ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হবে বলেই মত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের।

চাপ বাড়ছে দিল্লির উপর, নীরব কূটনীতি কি এবার বদলাবে?

এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পক্ষে চুপ করে থাকা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ট্যারিফ চাপানোকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রীতিনীতির পরিপন্থী বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও এখনও পর্যন্ত দিল্লি কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। প্রশ্ন উঠছে—কূটনীতির টেবিলে এবার কি মোদীর পাল্টা ঘুঁটি পড়বে?