কলকাতা: ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগে রাজ্যের দুই নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ERO) এবং দুই সহকারী নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (AERO)-কে সাসপেন্ড করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। এবার সরাসরি কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek slams election commission)।
বৃহস্পতিবার দিল্লি যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব তখনই শুরু হয়, যখন আদর্শ আচরণবিধি জারি হয়। এখন ভোটের প্রায় এক বছর বাকি। তা সত্ত্বেও কমিশন এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছে। এটা সংবিধানবিরোধী।”
তাঁর অভিযোগ, কমিশন বিজেপির মদতেই কাজ করছে এবং রাজ্য প্রশাসনের স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করছে। বিজেপিকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই ‘নির্লজ্জ’ ভূমিকা নিচ্ছে কমিশন, বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
‘ভোটাধিকার কাড়তে চাইছে বিজেপি’
অভিষেকের কথায়, “নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে বিজেপি এমন ব্যবস্থা করতে চাইছে, যাতে বাংলা ভাষায় কথা বলা মানুষদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না দেওয়া যায়।” এর সঙ্গেই তিনি দাবি করেন, “বিচারব্যবস্থাকেও একইভাবে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। ২০২১ সালের পর থেকে কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলার মানুষ দেখেছেন, কীভাবে সেই তদন্ত ব্যবহৃত হয়েছে।”
কোন কোন অফিসার সাসপেন্ড
ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছে বারুইপুর পূর্বের ERO দেবত্তম দত্ত চৌধুরী এবং ময়নার ERO বিপ্লব সরকারকে। পাশাপাশি, বারুইপুর পূর্বের AERO তথাগত মণ্ডল ও ময়নার AERO সুদীপ্ত দাসকেও সাসপেন্ড করেছে কমিশন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা: ‘ভয় পাবেন না, জীবন দিয়ে রক্ষা করব’
এই ঘটনার একদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শাস্তি দেব না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে আপনাদের রক্ষা করব।”
ভোটের একবছর আগেই এই ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তীব্র হয়ে উঠছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ তুলছে, এইসব সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। এর ফলে আগামী মাসগুলোতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও বাড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।