বীরভূমের রাজনীতিতে ‘ফিরলেন কেষ্ট’? সরকারি তালিকায় ১ নম্বরে অনুব্রত, পিছনে কাজল শেখ

বীরভূম: গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতারি থেকে ভাইরাল অডিও-কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর রাজনৈতিক দৌত্য থেকে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। দলীয় অনুষ্ঠানে…

Anubrata Mondal comeback

বীরভূম: গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতারি থেকে ভাইরাল অডিও-কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর রাজনৈতিক দৌত্য থেকে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। দলীয় অনুষ্ঠানে জায়গা হারিয়েছিলেন, পুলিশের কাছে অডিও নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, এমনকি শহিদ দিবসের দিনে ধর্মতলার মঞ্চে পৌঁছেও ফিরতে হয়েছিল পুলিশের বাধায়। কিন্তু সেই অনুব্রতের নামই এবার সরকারি এক অনুষ্ঠানের তালিকায় উঠে এল এক নম্বরে (Anubrata Mondal comeback)। আর তাঁরই দীর্ঘদিনের ‘বিরোধী’ কাজল শেখকে রাখা হল চার নম্বরে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন জাগছে, তাহলে কি ‘ফিরে এলেন কেষ্ট’?

ভাইরাল অডিও থেকে বিচ্ছিন্নতা, তারপর…

গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতারির পর জামিনে মুক্ত অনুব্রতের বিরুদ্ধে কিছুটা সংযত অবস্থান নিয়েছিল ঘাসফুল শিবির। তবে সম্প্রতি পুলিশকর্তার সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হতেই চাপ বেড়ে যায় তৃণমূল নেতৃত্বের উপর। অস্বস্তির ছায়া দীর্ঘ হয় অনুব্রতকে ঘিরে।

   

মমতার সঙ্গে বৈঠকের পরেই পাল্টাল ছবি

সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম সফরের সময় জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে হাজির হন অনুব্রত মণ্ডলও। সেখানেই মমতার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ আলাপ হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই বৈঠকই মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দেয়। বৈঠকের পর জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক পদে ফের তাঁর নাম ঘোষণা হয়। নিরাপত্তাও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দলের অভ্যন্তরে তাঁর প্রভাব ফের দৃশ্যমান হতে থাকে।

বিশ্ব আদিবাসী দিবস: তালিকায় শীর্ষে অনুব্রতর নাম

৭ থেকে ১০ অগাস্ট পর্যন্ত জেলায় বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সরকারি উদ্‌যাপন চলবে। এই উপলক্ষে প্রস্তুতি কমিটির তালিকায় ১ নম্বরে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তালিকার ৪ নম্বরে রয়েছেন কাজল শেখ—জেলা রাজনীতিতে অনুব্রত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত নেতা। আর এখানেই নজর কাড়ছে সমীকরণ।

Advertisements

রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট?

এই নামের বিন্যাস নিছক প্রশাসনিক তালিকা নয়, এ যেন দলের অভ্যন্তরে ফের অনুব্রতের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার এক নীরব বার্তা। ঘরোয়া রাজনীতির ব্যাকরণে এর অর্থ স্পষ্ট, ‘কেষ্ট’ ফিরে এসেছেন, শুধু প্রতীকীভাবে নয়, আবারও জেলা নেতৃত্বের কেন্দ্রে।

বীরভূমে তৃণমূলের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই ঘুরপাক খেয়েছে অনুব্রত-কাজল দ্বন্দ্বের ইস্যুতে। সেখানে ফের অনুব্রতের প্রাধান্য অনেক কিছুই বলছে। প্রশ্ন এখন শুধু একটাই—এই কামব্যাক কি চূড়ান্ত, না কি এখনও তা সময়সাপেক্ষ কৌশল?