বিদ্যাসাগরকে অপমান, বিস্ফোরক মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র

ঝাড়গ্রামে বাংলা এবং বাঙালির অধিকারের স্বার্থে পদযাত্রায় যোগ দেন মমতা বন্দোপাধ্যায় (Vidyasagar)। তারপর বক্তৃতা দেন জনসভায়। এর মাঝেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মনীষীদের। এখানেই গন্ডগোলের সূত্রপাত।…

Vidyasagar insult allegation by suvendu

ঝাড়গ্রামে বাংলা এবং বাঙালির অধিকারের স্বার্থে পদযাত্রায় যোগ দেন মমতা বন্দোপাধ্যায় (Vidyasagar)। তারপর বক্তৃতা দেন জনসভায়। এর মাঝেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মনীষীদের। এখানেই গন্ডগোলের সূত্রপাত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন মমতা নিজের উত্তরীয় খুলে পরিয়ে দিয়েছেন বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তিতে।

শুভেন্দু তার সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে অভিযোগ করেছেন একজন মনীষীর সঙ্গে এই জাতীয় ব্যবহার অশিক্ষার পরিচয়। তিনি আরও বলেছেন মমতা নিজেকে সবার উপরে ভাবেন কিন্তু তার ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র হয়ে বিদ্যাসাগরের এই অপমান কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না।

   

শুভেন্দু অধিকারী তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, “ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির গর্ব। তাঁর মূর্তিতে এমন আচরণ সমগ্র বাঙালির অপমান। মমতার এই কাজকে কাক ও কোকিলের সঙ্গে তুলনা করেছেন শুভেন্দু।”

বিরোধী দলনেতা উল্লেখ করেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদ্যাসাগরকে বাংলার ‘একক’ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। তাঁর ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ ভাষণে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “আমাদের এই অবমানিত দেশে ঈশ্বরচন্দ্রের মতো অখণ্ড পৌরুষের আদর্শ কেমন করে জন্ম নিল, আমরা তা বলতে পারি না।

মানব-ইতিহাসের বিধাতা গোপনে বঙ্গভূমির প্রতি বিদ্যাসাগরকে মানুষ করার ভার দিয়েছিলেন।” শুভেন্দু এই উদ্ধৃতি তুলে ধরে মমতার আচরণকে ‘আস্পর্ধা’ বলে সমালোচনা করেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “নিজের গলার উত্তরীয় খুলে কোনো মনীষীর মূর্তিতে পরানো যায়? এটি কি ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ?”

তিনি আরও বলেন, “বিদ্যাসাগর শুধু মেদিনীপুরের নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের গর্ব। তিনি বাংলা ভাষার লিপি সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বাংলা ভাষা ও বাঙালির কথা বলছেন, সেই ভাষার উন্নয়নে বিদ্যাসাগরের অবদান অপরিসীম। তাঁর প্রতি এমন অসম্মান বাঙালির আবেগে আঘাত হানে।”

Advertisements

শুভেন্দু মমতার কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি মমতার কাছে উত্তরীয় বা মালা কেনার টাকা না থাকে, তাহলে খালি হাতে প্রণাম করতে পারতেন। এই আত্মম্ভরীতা আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়।”এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক প্ররোচনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি রাজনৈতিক বাদানুবাদের দিকে মোর নিলেও বিরোধী দলনেতার অভিযোগ যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত।

গালওয়ান সংঘর্ষের পর প্রথমবার চলতি মাসেই মোদীর চীন সফর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শুধু ভাষা নয় বাঙালির দীর্ঘদিনের সামাজিক ধ্যান ধারণা ভেঙে দিয়ে পাস করিয়েছিলেন বিধবা বিবাহ আইন। মেয়েদের শিক্ষায় তার অগ্রণী ভূমিকার কথা আমরা কি করে ভুলতে পারি। সব মিলিয়ে বাংলা ও বাঙালির কাছে তিনি প্রাতঃস্মরণীয় ব্যাক্তিত্ব। এমন একজন ব্যাক্তিত্বের প্রতি এই ধরণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন যে বাঙালিকে আশাহত করবে তা বলাই বাহুল্য।