প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বাড়াতে অভিনব পদক্ষেপ কেন্দ্রের

ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (MeitY) সংসদে জানিয়েছে, (Competitive Exams)আধার ফেস অথেনটিকেশন প্রযুক্তি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা জোরদার করতে…

Competitive Exams new reforms

ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (MeitY) সংসদে জানিয়েছে, (Competitive Exams)আধার ফেস অথেনটিকেশন প্রযুক্তি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই প্রযুক্তি পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি, পরিচয় প্রতারণা এবং অন্যান্য অনিয়ম রোধে কার্যকর হবে বলে মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।

বুধবার রাজ্যসভায় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আধার ফেস অথেনটিকেশন ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীদের পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ হবে, যা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াবে।

   

আধার ফেস অথেনটিকেশন হলো একটি বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি, যা পরীক্ষার্থীর মুখের ছবি স্ক্যান করে তার আধার কার্ডের সঙ্গে সংযুক্ত বায়োমেট্রিক তথ্যের সাথে মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে। এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা, ব্যাঙ্কিং এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে চলছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পরীক্ষায় জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার পর।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া আরও সুগম এবং সঠিক হবে, যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।মন্ত্রী জিতিন প্রসাদ রাজ্যসভায় বলেন, “আধার ফেস অথেনটিকেশন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলির জন্য একটি গেম-চেঞ্জার হতে পারে। এটি পরীক্ষার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করার একটি নির্ভরযোগ্য উপায়, যা জালিয়াতি রোধ করবে এবং পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনবে।

এছাড়াও, এটি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতা বাড়াবে।” তিনি আরও জানান, ভারতীয় ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি (ইউআইডিএআই) এই প্রযুক্তির প্রয়োগে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং এটি পরীক্ষার কেন্দ্রগুলিতে বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ইউপিএসসি, এসএসসি, রেলওয়ে নিয়োগ বোর্ড এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় জালিয়াতি ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।

এই ঘটনাগুলি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা এবং প্রশাসনের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। আধার ফেস অথেনটিকেশনের ব্যবহার এই সমস্যাগুলির সমাধানে একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীদের মুখ স্ক্যান করা হবে, যা তাদের আধার কার্ডের সঙ্গে মিলিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরিচয় নিশ্চিত করবে।

এর ফলে ভুয়ো পরীক্ষার্থী বা প্রক্সি পরীক্ষার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে।ইউআইডিএআই-এর তথ্য অনুযায়ী, আধার ফেস অথেনটিকেশন প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই ১০০ কোটিরও বেশি আধার কার্ডধারীদের জন্য বায়োমেট্রিক ডেটা সংরক্ষণ করেছে।

Advertisements

এই প্রযুক্তি ব্যবহারে গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার এই বিষয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ডেটা প্রোটেকশন আইন, ২০২৩-এর অধীনে আধার তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, ফেস অথেনটিকেশনের জন্য শুধুমাত্র সীমিত ডেটা ব্যবহার করা হবে এবং এটি পরীক্ষার্থীদের গোপনীয়তার উপর কোনও প্রভাব ফেলবে না।রাজনৈতিক মহলেও এই উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলোর একাংশ দাবি করেছে, আধার ফেস অথেনটিকেশন বাস্তবায়নের আগে এর প্রযুক্তিগত এবং লজিস্টিক চ্যালেঞ্জগুলি সমাধান করা উচিত।

বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর অভাব এই প্রক্রিয়ার বাস্তবায়নকে জটিল করতে পারে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বামাল সমেত গ্রেফতার সাংসদের হার ছিনতাই মামলায় অভিযুক্ত

এই উদ্যোগ প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত খুলতে পারে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাস পুনরুদ্ধার এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগামী দিনে এই প্রযুক্তির বাস্তবায়ন কীভাবে এগোয় এবং এর প্রভাব কী হয়, তা নিয়ে সবার নজর রয়েছে।