চেন্নাই: আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমা রেখা (IMBL) অতিক্রম করার অভিযোগে ফের ১৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করল শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী। তামিলনাড়ুর পামবান এবং থিরুপালাইকুড়ি উপকূল থেকে রওনা হওয়া দুই দলে বিভক্ত এই মৎস্যজীবীদের বুধবার আলাদা আলাদা এলাকায় আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে (sri lanka arrests indian fishermen)।
প্রথম ঘটনায়, পামবান বন্দর থেকে যাত্রা করা দশজন মৎস্যজীবীর একটি ট্রলার কার্পিত্তি উপকূলের কাছাকাছি আটক করে শ্রীলঙ্কার নৌসেনা। পরে তাঁদের ভেনবুজা ফিশারমেন পোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে, থিরুপালাইকুড়ি থেকে একটি দেশি নৌকায় যাত্রা শুরু করা আরও চারজন মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়েছে কচ্ছতীরুভু (Katchatheevu) এলাকায়। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কার কংগেসনথুরাই নৌ-শিবিরে।
এই ঘটনার মাত্র কদিন আগেই, ২৯ জুলাই, একই অভিযোগে আরও ১৪ জন তামিল মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়েছিল। তখনও তাঁদের যান্ত্রিক নৌকা বাজেয়াপ্ত করেছিল শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী।
পরপর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন। তিনি বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে অবিলম্বে মৎস্যজীবীদের এবং তাঁদের নৌকা মুক্তির দাবি জানান। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বারবার ভারতীয় মৎস্যজীবীদের এভাবে আটক করা কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
এর আগে ১৩ জুলাই রামেশ্বরম থেকে রওনা হওয়া সাতজন মৎস্যজীবীকে একই ধরনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী। সেই ঘটনায় একটি যান্ত্রিক ট্রলারও বাজেয়াপ্ত হয়, যার মালিক ছিলেন থাঙ্গাচিমাডামের বাসিন্দা ভি আইজ্যাক পল। তখন দাবি করা হয়েছিল, একটি শ্রীলঙ্কান নৌকোর সঙ্গে মাঝ সমুদ্রে ধাক্কা লাগে ভারতীয় ট্রলারের।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ১৮৫ জনেরও বেশি ভারতীয় মৎস্যজীবী এবং ২৫টি ট্রলার আটক করেছে শ্রীলঙ্কা। এই ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে, বিশেষত আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমান্তবর্তী এলাকায় মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিয়ে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এখন সময় এসেছে ভারত-শ্রীলঙ্কা দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সমঝোতার, যাতে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের রক্ষা করা যায় এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যায়।