শুভেন্দুর কনভয়ে হামলা, পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর, উত্তপ্ত কোচবিহার

কোচবিহার: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার অভিযোগ ঘিরে মঙ্গলবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। অভিযোগের তির সরাসরি তৃণমূল কর্মীদের দিকে। বিক্ষোভ, কালো পতাকা, জুতো ছোড়া…

Suvendu Adhikari Convoy Attack

কোচবিহার: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার অভিযোগ ঘিরে মঙ্গলবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহার। অভিযোগের তির সরাসরি তৃণমূল কর্মীদের দিকে। বিক্ষোভ, কালো পতাকা, জুতো ছোড়া থেকে গাড়ি ভাঙচুর, ঘটনার ঘনঘটায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় খাগড়াবাড়ি চৌপতি এলাকা (Suvendu Adhikari Convoy Attack)

সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে বিমানে বাগডোগরা হয়ে এদিন কোচবিহারে পৌঁছোন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল বিজেপি বিধায়কদের উপর হামলার অভিযোগ নিয়ে কোচবিহার পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ। সেই উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিট নাগাদ খাগড়াবাড়ি চৌপতিতে পৌঁছাতেই তাঁর কনভয় ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ।

   

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, এলাকায় আগে থেকেই জমায়েত ছিলেন একদল তৃণমূল কর্মী। কারও হাতে ছিল দলীয় পতাকা, কারও হাতে কালো পতাকা। শুভেন্দুর কনভয় চোখে পড়তেই তাঁরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগানে ফেটে পড়েন। অভিযোগ, বিক্ষোভের মাঝেই একাধিক ব্যক্তি বিরোধী দলনেতার গাড়ি লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন। দলীয় পতাকার লাঠি দিয়েও কাচ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

শুধু শুভেন্দুর গাড়ি নয়, তাঁর কনভয়ের সঙ্গে থাকা একটি পুলিশের গাড়ির উপরও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেই গাড়ির কাচ সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক হামলা। তাঁদের প্রশ্ন, পুলিশের সামনে দাঁড়িয়েও কীভাবে এমন আক্রমণ হতে পারে? যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisements

বাংলাদেশি সন্দেহে ভিন্‌রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্যের রাজনীতি। ঘটনাকে ঘিরে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বাংলা ভাষায় কথা বললেই বিজেপিশাসিত রাজ্যে আক্রান্ত হতে হচ্ছে বাংলার শ্রমিকদের। এই ঘটনায় তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতৃত্বকে।

ঠিক এই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার কোচবিহারের একাধিক এলাকায় ‘ভাষা আন্দোলন’ কর্মসূচি নেয় তৃণমূল। দলের জেলা নেতৃত্বের দাবি অনুযায়ী, জেলার উনিশটি স্থানে অবস্থান-বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। সেই তালিকায় ছিল কোচবিহারের খাগড়াবাড়িও। যেখানে এদিন শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় পৌঁছানো মাত্রই শুরু হয় বিক্ষোভ ও উত্তেজনা।

বিজেপি অবশ্য এই ঘটনার নেপথ্যে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার সরাসরি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “শুভেন্দুবাবুর কর্মসূচি পূর্বঘোষিত ছিল। পুলিশ তা জানত। তা সত্ত্বেও কেন নিরাপত্তার পূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? কেন বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হল? কেমন করে একদল বিক্ষোভকারী নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ভেঙে বিরোধী দলনেতার কনভয়ের এত কাছে পৌঁছে গেলেন?”

পাল্টা সুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “বিজেপি বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে। যারা বাংলার গরিমা অস্বীকার করে, তাদের সর্বত্র প্রতিবাদের মুখে পড়তে হবে।” যদিও শুভেন্দুর কনভয়ে হামলা বা গাড়ি ভাঙচুর নিয়ে তিনি মুখ খোলেননি।