প্রকাশ্যে সাংসদের হার ছিনতাই, দিল্লি পুলিশকে কাঠগড়ায় তুললেন প্রিয়াঙ্কা

এসেছিলেন বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে। পড়লেন ছিনতাই বাজের খপ্পরে (Priyanka)। দিল্লির রাজপথে সকালের হাঁটার সময় কংগ্রেস সাংসদ আর. সুধার গলার সোনার হার ছিনতাইয়ের ঘটনায় তীব্র…

Priyanka gandhi alleges delhi police

এসেছিলেন বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে। পড়লেন ছিনতাই বাজের খপ্পরে (Priyanka)। দিল্লির রাজপথে সকালের হাঁটার সময় কংগ্রেস সাংসদ আর. সুধার গলার সোনার হার ছিনতাইয়ের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। তিনি দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে সাধারণত দূতাবাসগুলির কাছাকাছি থাকায় নিরাপত্তা বেশি থাকে।

তাই এই ঘটনা অত্যন্ত বিস্ময়কর। সুধা জানিয়েছেন, দুর্ভাগ্যবশত তিনি যখন ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের গাড়ির কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিলেন, তখন পুলিশ তেমন কোনো সাড়া দেয়নি। যদি একজন সাংসদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে, তবে সাধারণ মহিলাদের ক্ষেত্রে কী হয়, যারা দিল্লির মতো শহরে প্রতিদিন এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হন?

   

পুলিশের সতর্কতা ও সক্রিয়তা অবশ্যই থাকা উচিত।”ঘটনার বিবরণকংগ্রেস সাংসদ আর. সুধা দিল্লির একটি নিরাপদ এলাকায় সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন, যখন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা তার গলার সোনার হার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনা ঘটে দূতাবাস এলাকার কাছাকাছি, যেখানে সাধারণত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে।

সুধা ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে কাছেই থাকা পুলিশের গাড়ির কাছে গিয়ে সাহায্য চান, কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনা দিল্লির নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পুলিশের দায়িত্বশীলতার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রতিক্রিয়া

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনাকে দিল্লিতে মহিলাদের নিরাপত্তার সামগ্রিক চিত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দেখেছেন। তিনি বলেন, “দিল্লির মতো শহরে মহিলাদের উপর হামলা বা ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রতিদিনের ঘটনা। যদি একজন সাংসদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে এবং পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ না নেয়, তবে সাধারণ মহিলাদের কী অবস্থা হয় তা সহজেই অনুমেয়।”

তিনি পুলিশের উদাসীনতার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর আরও সতর্ক এবং সক্রিয় হওয়া উচিত। এই ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র নিরাপত্তার অভাবই নয়, বরং সাধারণ মানুষের প্রতি পুলিশের দায়িত্বহীনতাকেও প্রকাশ করে।”

দিল্লিতে মহিলাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি

দিল্লি দীর্ঘদিন ধরে মহিলাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল শহর হিসেবে পরিচিত। জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ছিনতাই, শ্লীলতাহানি এবং অন্যান্য অপরাধ প্রতিদিন ঘটছে, যা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে তুলে ধরে।

এই ঘটনা এই প্রেক্ষাপটে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ এটি একজন সাংসদের সঙ্গে ঘটেছে, যিনি সমাজের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, “যদি একজন সাংসদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটে, তবে সাধারণ মহিলারা কতটা নিরাপত্তাহীন তা সহজেই বোঝা যায়।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস দল এই ঘটনাকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দিল্লি পুলিশের ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে, এবং এই ঘটনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রতি ইঙ্গিত করে।

Advertisements

কংগ্রেস নেতারা এই ঘটনার তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ব্যবহারকারী এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, “দিল্লি পুলিশের এই উদাসীনতা অগ্রহণযোগ্য। একজন সাংসদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা কতটা বিপন্ন তা স্পষ্ট।”

সমাজের প্রতি আহ্বান

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনার মাধ্যমে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে বৃহত্তর সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ এবং প্রশাসনের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।

এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।” তিনি সাধারণ মহিলাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “মহিলারা প্রতিদিন এই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হন।
তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”

চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎএই ঘটনা দিল্লির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে প্রকাশ করেছে। দিল্লি পুলিশের উপর এখন চাপ বাড়ছে যে তারা এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে। এছাড়াও, এই ঘটনা মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য আরও কঠোর নীতি এবং পুলিশের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর এই বিবৃতি দিল্লির প্রশাসনের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই ছিনতাইয়ের ঘটনা কেবল একজন সাংসদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, বরং এটি দিল্লির মতো মহানগরীতে মহিলাদের সামগ্রিক নিরাপত্তার বিষয়কে সামনে এনেছে।

২৫ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় সার্বিক মূল্যায়ন, প্রশ্নপত্র দেবে পর্ষদ

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর প্রতিবাদ এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দিল্লি পুলিশ এবং প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ও দায়িত্বশীল হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়ানো যায়।