রাতভর বৃষ্টিতে ব্যহত জনজীবন। বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) উনা জেলার একাধিক এলাকা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উনায় ২২২.৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারী বৃষ্টির ফলে জলমগ্ন রাস্তাঘাট, বাজার এবং অন্যান্য জায়গা। চরম অসুবিধায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
চন্ডীগড়-ধরমশালা জাতীয় সড়কের পরিস্থিতি প্রায় এক। একাধিক জায়গার বন্যা পরিস্থিতি। কিছু বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে আধিকারিকরা।
ফলে, সমস্যার সম্মুখীন স্থানীয় চালকেরা এবং দোকানদাররা। পতঞ্জলী স্টোরের পিছনের বাড়িগুলিতে প্রায় ১০ ফিট জল ঢুকে পড়ে। বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছাদে উঠে পড়েন। বন্যার মতো পরিস্থিতির ফলে শিল্প খাত, আবাসিক এলাকা এবং সরকারি অফিসগুলির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।
উনার জেলাশাসক জতীন লাল জানিয়েছেন যে, “গত ১২ ঘন্টা ধরে এক নাগাড়ে বৃষ্টির ফলে অনেক এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি এবং রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।”
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আদেশ মেনে চলা নিশ্চিত করার নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি বাসিন্দাদের যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ সেলের টোল-ফ্রি নম্বর ১০৭৭-এ কল করার এবং গর্ত এবং নদীর তীরে যাওয়া এড়িয়ে চলার আহ্বান জানান।
বিয়াস নদী এবং এর উপনদীগুলি প্লাবিত হওয়ার সাথে সাথে, হামিরপুর জেলার সুজনপুর তিরার কাছে নদীর উপর নির্মিত সেতুর একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, নদীতে জলের স্তর বৃদ্ধির কারণে স্যান্ডহোলের কাছে সুজনপুর তিরার সাথে খয়েরির সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শনিবার, হিমাচল প্রদেশে মোট ৩৮৭টি রাস্তা – যার মধ্যে চারটি জাতীয় সড়ক: চণ্ডীগড়-মানালি, মানালি-লেহ, অট-লুহরি এবং খাব-গ্রামফু – যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ ছিল। রাজ্য জরুরি অপারেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এই ৩৮৭টি রাস্তার মধ্যে, দুর্যোগ কবলিত মান্ডি জেলায় সর্বাধিক ১৮৭টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এরপর কুল্লুতে ৬৯টি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০ জুন হিমাচল প্রদেশে বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের ১,৬৭৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যে বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯৮ জন মারা গেছেন এবং ৩৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন, এবং ১,৫২৬টি বাড়ি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাজ্যে ৪৭টি বন্যা, ২৮টি মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ৪২টি বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।