ভারতের কৃষকদের জীবনে সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (Kisan Samman Nidhi)যোজনা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই যোজনার অধীনে, ২ আগস্ট তারিখে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে একটি ক্লিকের মাধ্যমে দেশের ৯.৭ কোটিরও বেশি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০,৫০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ সরাসরি হস্তান্তর (DBT) করেছেন।
এই অর্থ প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির ২০তম কিস্তি হিসেবে কৃষকদের কাছে পৌঁছেছে, যা তাদের আর্থিক সুরক্ষা ও কৃষি কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করবে। এই কিস্তির মাধ্যমে প্রতিটি যোগ্য কৃষক পরিবার ২,০০০ টাকা পেয়েছে, যা তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তা।প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা ২০১৮ সালে চালু হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
এই যোজনার অধীনে, প্রতি বছর তিনটি কিস্তিতে ৬,০০০ টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা করা হয়। এই অর্থ কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত খরচ, যেমন বীজ, সার, কীটনাশক ক্রয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। এই যোজনা কৃষকদের আর্থিক বোঝা কমিয়ে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই ২০তম কিস্তির মাধ্যমে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। বিশেষ করে ওড়িশার পুরী লোকসভা কেন্দ্রের লক্ষাধিক কৃষক এই কিস্তির সুবিধা পেয়েছেন। পুরী লোকসভার সাংসদ এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং এই অর্থ কৃষকদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “এই যোজনা আমাদের অন্নদাতা কৃষকদের কল্যাণের জন্য নিবেদিত। আমি পুরী লোকসভার সমস্ত কৃষক পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই এবং সমস্ত কৃষক পরিবারকে এই সুবিধার জন্য অভিনন্দন জানাই।”প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি কৃষকদের জীবনে আত্মবিশ্বাস ও স্থিতিশীলতা এনেছে।
গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে কৃষকরা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাজারের অস্থিরতা এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কারণে কৃষকরা প্রায়ই আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হন। এই যোজনা তাদের জন্য একটি নিরাপত্তা জাল হিসেবে কাজ করে, যা তাদের এই সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করে।
এই যোজনার মাধ্যমে সরকার কৃষকদের কাছে সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপর নির্ভর করেছে। ডিবিটি (ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার) পদ্ধতি নিশ্চিত করে যে অর্থ সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছায় এবং এতে কোনো মধ্যস্থতাকারীর হস্তক্ষেপ থাকে না। এই স্বচ্ছ ব্যবস্থা কৃষকদের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা বাড়িয়েছে।
পুরীর কৃষকদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপুরী লোকসভা এলাকার কৃষকদের জন্য এই কিস্তি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ওড়িশার এই অঞ্চলটি কৃষিপ্রধান, এবং এখানকার কৃষকরা ধান, ডাল, তৈলবীজ এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। এই অর্থ তাদের কৃষি কার্যক্রমে নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার করবে।
উদাহরণস্বরূপ, এই অর্থ দিয়ে কৃষকরা উন্নতমানের বীজ কিনতে পারবেন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া করতে পারবেন, এবং তাদের ফসলের উৎপাদন বাড়াতে পারবেন।পুরীর সাংসদ আরও জানিয়েছেন যে, এই যোজনা কৃষকদের শুধুমাত্র আর্থিকভাবে সহায়তা করছে না, বরং তাদের মধ্যে একটি নতুন আশার সঞ্চার করছে। তিনি বলেন, “আমাদের কৃষকরা দেশের অন্নদাতা।
তাদের কল্যাণে সরকার যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তা এই যোজনার মাধ্যমে স্পষ্ট। আমরা কৃষকদের আরও উন্নত সুবিধা প্রদানের জন্য কাজ করে যাব।”একটি সমৃদ্ধ ভারতের দিকেপ্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা শুধুমাত্র কৃষকদের জন্যই নয়, বরং গ্রামীণ অর্থনীতির জন্যও একটি গেম-চেঞ্জার।
এই অর্থ গ্রামীণ বাজারে প্রবাহিত হয়ে স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। কৃষকরা যখন এই অর্থ ব্যবহার করে তাদের কৃষি কার্যক্রমে বিনিয়োগ করেন, তখন এটি উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।এই যোজনা ছাড়াও, সরকার কৃষকদের জন্য আরও অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যেমন ফসল বীমা, কৃষি ঋণ, এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রচার।
এই সমস্ত পদক্ষেপ কৃষকদের জীবনকে আরও সহজ ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার ২০তম কিস্তি দেশের কৃষকদের জন্য একটি নতুন আশার আলো। এই অর্থ তাদের কৃষি কার্যক্রমে সহায়তা করবে এবং তাদের জীবনে স্থিতিশীলতা আনবে।
৮০ হাজার বুথে জনতার দরবার! রাজ্যজুড়ে শুরু ‘আমাদের পাড়া-আমাদের সমাধান’ প্রকল্প
পুরী লোকসভার কৃষকদের জন্য এই কিস্তি একটি বিশেষ উপহার, যা তাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়তা করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর এই উদ্যোগ দেশের কৃষকদের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের প্রমাণ। আমরা আশা করি, এই যোজনা ভবিষ্যতেও কৃষকদের জীবনে সমৃদ্ধি ও সুখ নিয়ে আসবে।