ঢাকায় পাকিস্তানি এয়ার চিফ! গোপন সামরিক আঁতাত? উদ্বেগে দিল্লি

নয়াদিল্লি: দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশল রাজনীতিতে এক নতুন ও বিপজ্জনক মোড়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বায়ুসেনার মধ্যে ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত গোপন সামরিক বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর…

Pakistan Bangladesh Military Deal

নয়াদিল্লি: দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশল রাজনীতিতে এক নতুন ও বিপজ্জনক মোড়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বায়ুসেনার মধ্যে ঢাকা শহরে অনুষ্ঠিত গোপন সামরিক বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর তীব্র সতর্কতায় ভারত। এপ্রিল ১৫ থেকে ১৯, ২০২৫ টানা পাঁচ দিন ধরে ঢাকার অভ্যন্তরে চলে এই অজ্ঞাত সামরিক আলোচনাপর্ব (Pakistan Bangladesh Military Deal)।

সূত্র বলছে, যা একনজরে ‘অভিনন্দন বিনিময়’ বা ‘অ্যাভিয়েশন চুক্তি’ বলেই দেখানো হয়েছিল, তার অন্তরালে ছিল সাইবার যুদ্ধ, ড্রোন স্কোয়াড, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ পর্যবেক্ষণ এবং এমনকি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের দুঃসাহসিক পরিকল্পনা।

   

মিলিটারি সিমুলেশন ও ড্রোন স্কোয়াডে যৌথতা

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল- যৌথভাবে Modular & Unmanned Mission Trainers (MUMT–UMT) প্রযুক্তি তৈরি করার সিদ্ধান্ত, যা স্বয়ংক্রিয় ড্রোন স্কোয়াড ও যুদ্ধ প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিকাঠামো। চিনের সহায়তায় ইতিমধ্যেই পাকিস্তান এই ক্ষেত্রে অগ্রণী। সেই জ্ঞান ও প্রযুক্তি এখন সরাসরি হস্তান্তর করা হচ্ছে বাংলাদেশের কাছে।

একইসঙ্গে আলোচনায় এসেছে Tactical Air Data Link System সংযুক্তির প্রস্তাব৷ একটি এনক্রিপ্টেড রিয়েল-টাইম কমিউনিকেশন সিস্টেম, যা গ্রাউন্ড টু এয়ার ও এয়ার টু এয়ার স্ট্রাইক অপারেশনের ক্ষমতা বহু গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। পূর্ব ভারতে বায়ুসেনার স্ট্র্যাটেজিক দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে এই প্রযুক্তি বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা।

মহাকাশ ও সাইবার ফ্রন্টে পাকিস্তান-চিন-ঢাকা অক্ষ?

গোয়েন্দা নথিতে উঠে এসেছে মহাকাশ সহযোগিতা সম্পর্কিত প্রাথমিক স্তরের আলোচনার কথা। উপগ্রহ নির্ভর নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য (ISR) ভাগাভাগি নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। প্রেক্ষাপটে চীনের PLA Strategic Support Force–এর পরোক্ষ উপস্থিতির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও বিস্ময়কর, Flight SRNL-ভিত্তিক Augmented Reality (AR) ও Virtual Reality (VR)-র মাধ্যমে যুদ্ধ পরিস্থিতির লাইভ সিমুলেশন চালু হচ্ছে বাংলাদেশ স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ট্রেনিং স্কুলে (Sylhet)। এগুলি আপাতত বিশ্বের সেরা কমান্ডো ইউনিটের কাছে ব্যবহৃত প্রযুক্তি।

Advertisements

সাইবার যুদ্ধ ও ডিজিটাল আক্রমণের প্রস্তুতি

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে সাইবার আক্রমণ রুখতে ‘ম্যালওয়্যার-প্রতিরোধী’ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আক্রমণাত্মক সাইবার ট্রেনিং সরবরাহ করছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেনার মধ্যে তৈরি হচ্ছে অফেনসিভ সাইবার ইউনিট। এটি ভারতের জন্য এক গুরুতর ইঙ্গিত, কারণ অতীতে দিল্লি-সহ একাধিক রাষ্ট্রীয় সংস্থায় আঘাত হেনেছে ইসলামাবাদের ডিজিটাল ইউনিট।

রাষ্ট্রপতি সরানোর ছক: গোপন অভ্যুত্থান পরিকল্পনা?

সবচেয়ে বিস্ফোরক তথ্য, ফাঁস হওয়া নথিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনকে ‘সরিয়ে দেওয়া’র গোপন আলোচনা। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সংস্থার সহযোগিতায়, ঢাকায় নিযুক্ত প্রাক্তন আইএসআই ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি এই পরিকল্পনা চালাচ্ছে বলে অনুমান। উদ্দেশ্য, এক ‘সেনাবান্ধব’ রাজনৈতিক চেহারাকে সামনে এনে সরকারের উপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা।

Section 333-এর আড়ালে অস্ত্র রফতানি: আমেরিকার সাহায্যের অপব্যবহার?

অন্য এক স্পর্শকাতর তথ্য, মার্কিন Section 333–এর অধীনে অনুমোদিত সন্ত্রাসদমন সহায়তার ছত্রছায়ায় উন্নত অস্ত্র ঢোকানো হয়েছে বাংলাদেশে। সূত্রের দাবি, সেই অস্ত্র আপাতত ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের হাতে প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে দিলেও, তার ভবিষ্যৎ ব্যবহার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন চালানোর জন্য হতে পারে।

ভারতের অবস্থান: এখন নজরদারি নয়, প্রান্তিক পুনর্গঠন জরুরি

ভারতীয় নিরাপত্তা মহল মনে করছে, এই জোট কেবল সামরিক নয়— এটি কৌশলগত ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস। প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের মতে, ‘‘এটি ক্লাসিক কেস— পশ্চিমা সামরিক সহায়তার গোপন অপব্যবহার, যার পেছনে রয়েছে ইসলামাবাদের ছায়া নেতৃত্ব।’’

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন আর শুধু কূটনৈতিক সৌজন্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই সম্পর্ক ক্রমেই পরিণত হচ্ছে একটি ‘সাইলেন্ট স্ট্র্যাটেজিক অ্যালায়েন্স’-এ, যার ভিত তৈরি হচ্ছে ড্রোন যুদ্ধ, সাইবার ল্যাব, মহাকাশ নজরদারি এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য নিয়ে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা কৌশল ও কূটনৈতিক পরিমাপ এই মুহূর্তে আমূল পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।