কলকাতা: আবারও ধসে পড়ল শহরের পুরনো বাড়ি। শনিবার ভোরে উত্তর কলকাতার মানিকতলা মেন রোডে ভেঙে পড়ে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো রাজবাড়ির একটি একাংশ। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে দুটি শিশু। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকালে আচমকাই হুড়মুড়িয়ে বাড়ির পেছনের অংশ ভেঙে পড়ে পাশের বাড়ির উপর (Manicktala Old Building Collapse)। একটি ভারী চাঙর গিয়ে পড়ে একটি বহুতলের কেয়ারটেকারের ঘরে, যেখানে ওই দুই শিশু ছিল। তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ESI হাসপাতালে।
প্রথম আলো ফোটার আগেই ভয়াল শব্দ, ধ্বংসস্তূপে আহত শিশুরা
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল ৬টা নাগাদ হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ভেঙে পড়া অংশটি পড়ে পাশের একতলা বাড়ির উপর এবং পাশাপাশি থাকা বহুতলের কেয়ারটেকার ঘরের ছাদ ভেঙে ফেলে। আশঙ্কার কথা, রাজবাড়িটির পেছনের অংশ কার্যত সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে এবং মূল কাঠামো বিপজ্জনকভাবে হেলে গেছে পাশের বাড়ির দিকে।
কয়েক বছর ধরেই ছিল বিপজ্জনক চিহ্নিত, তবু নিষ্ক্রিয় প্রশাসন
ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তি রঞ্জন কুণ্ডু। তিনি জানান, “বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরেই বসবাসের অযোগ্য এবং বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে চিহ্নিত ছিল। পুরসভার তরফে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়। তবে শরিকি বিবাদের জেরে কোনও আইনানুগ পদক্ষেপ সম্ভব হয়নি।’’ তিনি আরও জানান, যেখান থেকে বাড়ির অংশ ভেঙে পড়েছে, সেখানে কেউ বসবাস করতেন না, তবে ওই বাড়ির অন্য অংশে এখনও কয়েকজন বাসিন্দা রয়েছেন।
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত শহর, ফের প্রশ্নের মুখে পুরসভার সতর্কতা ব্যবস্থাপনা
গত এক সপ্তাহে কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরপর পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে নাগরিক মহলে।
২৫ জুলাই: শহরের ২টি জায়গায় দুটি বাড়ি ভেঙে পড়ে
২৮ জুলাই: জানবাজারে ধসে পড়ে বাড়ির একাংশ
২৯ জুলাই: নারকেলডাঙা ও মুচিপাড়া এলাকায় দুটি পৃথক ঘটনায় বাড়ি ভাঙার ঘটনা
গিরিশ পার্ক: একদিনে দু’টি বিপজ্জনক বাড়ির অংশ ধসে পড়ে
প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুরসভার তরফে বিপজ্জনক বাড়ির বোর্ড লাগানো থাকলেও বাস্তবিক পদক্ষেপের অভাবে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
স্থানীয়দের ক্ষোভ ও আশঙ্কা
মানিকতলার এই রাজবাড়িটি এক সময়ের জমিদার বাড়ি, বর্তমানে শরিকি মালিকানায় রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ৷ তাঁদের অভিযোগ, পুরসভা শুধুমাত্র ‘বিপজ্জনক’ নোটিশ দিয়েই দায় সারে। বারবার আবেদন করা হলেও ভাঙা হয়নি এই বাড়ি। আর আজ তারই খেসারত দিতে হল দুই শিশুকে।