বলিউডের ‘কিং অফ রোমান্স’ শাহরুখ খানের (Shahrukh Khan) ৩৩ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের স্বাদ পেলেন তিনি। ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাঁর অভিনীত ‘জওয়ান’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার (সংযুক্তভাবে) জিতেছেন শাহরুখ। এই পুরস্কার তিনি ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেতা বিক্রান্ত মাসির সঙ্গে, যিনি ‘১২ ফেল’ ছবির জন্য একই বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন।
এছাড়া, ‘১২ ফেল’ ছবিটি শ্রেষ্ঠ হিন্দি চলচ্চিত্রের পুরস্কারও জিতেছে, যা এই বছরের পুরস্কারের তালিকায় একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জওয়ান’ শাহরুখ খানের ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক সাফল্য। সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত এই অ্যাকশন-থ্রিলার ছবিতে শাহরুখের দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল।
ছবিটি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে ১,১৪৮ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে এবং শাহরুখের অভিনয়ের গভীরতা ও বহুমুখিতা প্রশংসিত হয়েছে। এই ছবির মাধ্যমে শাহরুখ জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে প্রথমবার পা রাখলেন, যা তাঁর ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার এনেছে।অন্যদিকে, বিধু বিনোদ চোপড়া পরিচালিত ‘১২ ফেল’ ছবিটি শ্রেষ্ঠ হিন্দি চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে সবার নজর কেড়েছে।
বিক্রান্ত মাসির অভিনীত এই ছবি একজন সাধারণ মানুষের অসাধারণ সংগ্রামের গল্প বলে, যিনি ভারতের কঠিনতম পরীক্ষা ইউপিএসসি-তে সাফল্য লাভের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা পাওয়ার পাশাপাশি দর্শকদের হৃদয়ও জয় করেছে। বিক্রান্ত মাসির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় তাঁকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার এনে দিয়েছে, যা তাঁর ক্যারিয়ারের একটি মাইলফলক।
৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ঘোষণা ১ আগস্ট, ২০২৫-এ নয়াদিল্লিতে হয়েছে। এই বছরের পুরস্কারে আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নাম উঠে এসেছে। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন রানি মুখার্জি। এছাড়া, গুজরাটি ছবি ‘বশ’ শ্রেষ্ঠ গুজরাটি চলচ্চিত্রের পুরস্কার অর্জন করেছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত হয়, যা চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিল্পীদের শৈল্পিক অবদানকে স্বীকৃতি দেয়।
শাহরুখ খানের জাতীয় পুরস্কার জয় তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনের একটি বড় অর্জন। ১৯৮৮ সালে দূরদর্শনের ধারাবাহিক ‘ফৌজি’ দিয়ে অভিনয়ে পা রাখা শাহরুখ ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর ‘বাজীগর’, ‘ডর’, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘দেবদাস’, ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ এবং ‘পাঠান’-এর মতো ছবিতে তিনি দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।
তিনি ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন, যার মধ্যে ৮টি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য, কিন্তু জাতীয় পুরস্কার এতদিন তাঁর হাতছাড়া ছিল। এই অর্জন তাঁর বহুমুখী অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ।সামাজিক মাধ্যমে শাহরুখের ভক্তরা এই সাফল্য উদযাপন করছেন। অনেকেই মনে করছেন, ‘জওয়ান’-এ তাঁর অভিনয় এই পুরস্কারের জন্য একেবারে যোগ্য ছিল।
বিজেপি নেতার দাদাগিরি! দুর্গাপুরে প্রবীণ ব্যক্তিদের ‘গরু পাচারকারী’ সন্দেহে নির্যাতন
একইভাবে, ‘১২ ফেল’-এর সাফল্য ভারতীয় চলচ্চিত্রের গল্প বলার শক্তিকে আরও একবার তুলে ধরেছে। এই পুরস্কার ঘোষণা ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে নতুন উৎসাহ এনেছে এবং শাহরুখ খান ও বিক্রান্ত মাসির মতো শিল্পীদের প্রতিভাকে সেলাম জানিয়েছে।