ভারতে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার চক্রীদের বিরুদ্ধে চার্জশীট NIA এর

জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজব-উত-তাহরির (HUT) তিনজন সক্রিয় সদস্যের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে। এই জঙ্গিরা ভারতে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার…

NIA issued chargsheet

জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজব-উত-তাহরির (HUT) তিনজন সক্রিয় সদস্যের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে। এই জঙ্গিরা ভারতে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিষিদ্ধ সংগঠনের মতাদর্শ প্রচার এবং বিদেশি ও অন্যান্য উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল।

অভিযুক্তদের নাম কবির আহমেদ আলিয়ার ওরফে কবির আহমেদ, আজিজ আহমেদ ওরফে জলিল আজিজ আহমেদ এবং বাভা বাহরুদিন ওরফে মান্নাই বাভা। এই তিনজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC) এবং অবৈধ কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন, ১৯৬৭ (ইউএ(পি)এ) এর সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি এনআইএ-র চেন্নাই শাখায় নথিভুক্ত হয়েছে, যার কেস নম্বর আরসি-০১/২০২৪/এনআইএ/সিএইচই।

   

এনআইএ-র তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, অভিযুক্তরা হিজব-উত-তাহরির নেতাদের সঙ্গে মিলে ভারতে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। তারা ভারতের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন শক্তির সামরিক সহায়তা চেয়েছিল এবং এইচইউটি-র প্রতিষ্ঠাতা তাকি আল-দিন আল-নাভানির লেখা সংবিধান কার্যকর করার পরিকল্পনা করেছিল।

তদন্তে আরও জানা গেছে, এই তিনজন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমর্থন পাওয়ার জন্য হজ এবং উমরাহ যাত্রীদের মাধ্যমে যোগাযোগের পরিকল্পনা করেছিল। তারা গোপন বয়ান ক্লাসের মাধ্যমে দুর্বল যুবকদের নিয়োগ করছিল এবং তাদের এইচইউটি-র মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ করছিল। এই সংগঠনটি গত বছর অক্টোবরে ভারত সরকার কর্তৃক সমস্ত প্রকাশ্য ও গোপন সংগঠন সহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

অভিযুক্তরা ইরান, তুরস্ক, মিশর এবং পাকিস্তানের মতো ইসলামিক দেশগুলির সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। এই প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য ছিল সহিংস জিহাদ এবং যুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে উৎখাত করার জন্য এই দেশগুলির সমর্থন আকর্ষণ করা।

এনআইএ-র তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, এই তিনজন জঙ্গি তরুণদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যম এবং গোপন সভার ব্যবহার করছিল। এই ঘটনা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এইচইউটি একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন, যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। ভারতে এই সংগঠনের কার্যকলাপ দীর্ঘদিন ধরে এনআইএ-র নজরে ছিল। তামিলনাড়ু এবং অন্যান্য রাজ্যে এই সংগঠনের গোপন নেটওয়ার্কের উপর নজরদারি চালিয়ে এনআইএ ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Advertisements

গত ডিসেম্বরে এনআইএ তামিলনাড়ুতে দুজন অভিযুক্ত, আব্দুল রেহমান এবং মুজিবুর রেহমানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল, যারা এইচইউটি-র মতাদর্শ প্রচার এবং গোপন ক্লাসের মাধ্যমে তরুণদের নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ছিল।

এনআইএ জানিয়েছে, এই মামলায় তদন্ত এখনও চলছে। সংস্থাটি এইচইউটি-র আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং তাদের অর্থায়নের উৎস উদঘাটনের জন্য গভীরভাবে তদন্ত করছে। এই সংগঠনের কার্যকলাপ ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এবং এনআইএ এই নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য সংগ্রহ এবং তাদের আন্তর্জাতিক সংযোগ উদঘাটনের জন্য এনআইএ ডিজিটাল ডিভাইস এবং অন্যান্য উপকরণ বিশ্লেষণ করছে।

এই ঘটনা ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। হিজব-উত-তাহরিরের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলি তরুণদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যম এবং গোপন নেটওয়ার্কের ব্যবহার করছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

চমক অলড্রেড-সাহাল! লিস্টনের গোলের রেশে মোলিনার তত্ত্বাবধানে অনুশীলনে বাগান

এনআইএ-র এই পদক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ প্রতিরোধে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। আগামী দিনে এই মামলার তদন্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ পেতে পারে, যা এই সংগঠনের নেটওয়ার্ক ভাঙতে সহায়ক হবে।