এবার সন্তান জন্মানোতেও AI-এর কৃতিত্ব! ১৮ বছর নিঃসন্তান থাকার কষ্ট অবশেষে লাঘব হল

বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) চমকপ্রদ প্রয়োগ এবার এক দম্পতির জীবনে আশার আলো এনে দিল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে,…

AI Helps Couple Conceive After 18 Years

বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) চমকপ্রদ প্রয়োগ এবার এক দম্পতির জীবনে আশার আলো এনে দিল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে কৃত্রিম মেধার সহায়তায় ১৮ বছর ধরে সন্তানহীনতায় ভোগা এক দম্পতি অবশেষে সফলভাবে সন্তান ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু ওই দম্পতির জন্যই নয়, বরং সারা বিশ্বের হাজার হাজার নিঃসন্তান দম্পতির জন্য এটি এক নতুন আশার বার্তা।

Realme-র ফোনে আর আসছে না Android 16 আপডেট, দেখে নিন তালিকায় আপনার মডেলটি আছে কিনা

   

বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল IVF

এই দম্পতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ‘মেল ইনফার্টিলিটি’ বা পুরুষের বন্ধ্যত্ব। স্বামীর স্পার্ম এতটাই দুর্বল ও সীমিত ছিল যে সাধারণভাবে তা শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাঁরা বিভিন্ন দেশে প্রচুর অর্থ খরচ করে বহুবার IVF (In-Vitro Fertilization) করিয়েছেন, কিন্তু প্রত্যেকবারই ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি চিকিৎসকরা শেষ পর্যন্ত স্পার্ম ডোনার বা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন, কিন্তু এই দম্পতি নিজেদের বায়োলজিক্যাল সন্তানের আশা ছাড়তে রাজি ছিলেন না।

AI প্রযুক্তি STAR নিয়ে এল সাফল্য

এই পরিস্থিতিতে আশার আলো হয়ে এল এক অত্যাধুনিক AI প্রযুক্তি – STAR, যার পূর্ণরূপ হল স্পার্ম ট্র্যাকিং অ্যান্ড রিকভারি সিস্টেম। এই প্রযুক্তি লক্ষ লক্ষ মাইক্রোস্কোপিক ইমেজ স্ক্যান করে দুর্বল, লুকানো এবং খুব কম সংখ্যায় থাকা কার্যকর স্পার্ম সনাক্ত করতে সক্ষম। এই ক্ষেত্রে স্টার প্রযুক্তি প্রায় ৮০ লক্ষ ইমেজ স্ক্যান করে মাত্র তিনটি কার্যকর ও স্বাস্থ্যকর স্পার্ম খুঁজে পায়। এই স্পার্ম ব্যবহার করেই IVF সফল হয় এবং নারীটি গর্ভধারণ করেন।

Advertisements

এই ঘটনা প্রমাণ করেছে যে কৃত্রিম মেধা কেবল রোবট বা চ্যাটবটেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি মানুষের জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল ক্ষেত্রেও যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে। সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো, স্টার প্রযুক্তির মাধ্যমে IVF করার খরচ সাধারণ পদ্ধতির তুলনায় অনেকটাই কম। যেখানে সাধারণ IVF-এ লাখ লাখ টাকা খরচ হয়, সেখানে স্টার প্রযুক্তিতে প্রক্রিয়াটি প্রায় ২.৬ লক্ষ টাকায় সম্পন্ন করা সম্ভব এবং অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন অনেকাংশেই এড়িয়ে যাওয়া যায়।

বর্তমানে স্টার প্রযুক্তি শুধুমাত্র নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ফার্টিলিটি সেন্টার-এ ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যান্য ফার্টিলিটি ক্লিনিকেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এবং বহু দম্পতির জীবন বদলে দিতে সক্ষম হবে।

এই ঘটনাটি এক দিক দিয়ে এআই-কে মানব জীবনের এক গভীর ও মানবিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সঙ্গী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। যারা এতদিন ধরে IVF ব্যর্থতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য এটি হতে পারে একটি কার্যকর এবং আশা জাগানোর মতো বিকল্প।