সংসদ ভবনে প্রবেশে বাঁধা, ‘গণতন্ত্রের ‘কালো দিন’ কটাক্ষ কংগ্রেসের

সংসদ ভবনে সাংসদদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি (Congress)।ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি ‘দুঃখজনক ও কালো দিন’ হিসেবে…

Congress protest in parliament

সংসদ ভবনে সাংসদদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি (Congress)।ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি ‘দুঃখজনক ও কালো দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, কমান্ডো বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (CISF) সহ অন্যান্য বাহিনী সাংসদদের জোরপূর্বক আটকে রেখেছে।

এমনকি মহিলা সাংসদদেরও পুরুষ কর্মীরা বাধা দিয়েছেন। তিওয়ারি দাবি করেছেন, সংসদের বাইরের লোকজনকে ডেকে এনে সাংসদদের সংসদের কূপে (Well) প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য একটি কলঙ্কজনক ঘটনা। এই ঘটনার প্রতিবাদে কংগ্রেস লোকসভার স্পিকার এবং রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছে।

   

তিনি জানিয়েছেন, এই পুরো ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।প্রমোদ তিওয়ারি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “আজ ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য একটি দুঃখজনক ও কালো দিন। কমান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ বলছে এটি CISF, কেউ বলছে অন্য কিছু। তাঁরা জোরপূর্বক সাংসদদের কর্মীদের কাছে যেতে বাধা দিয়েছে।

আমাদের মহিলা সাংসদদের আটকানো হয়েছে। পুরুষ কর্মীরা তাঁদের বাধা দিয়েছে। যেভাবে সংসদের বাইরের লোকজনকে ডেকে এনে সাংসদদের কূপে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে, এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি কালো দিন। আমরা এর বিরুদ্ধে স্পিকার ও ডেপুটি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সমস্ত কিছু ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।”এই ঘটনা সংসদের গণতান্ত্রিক কার্যপ্রণালী নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। তিওয়ারির অভিযোগ, এটি শুধু বিরোধী দলের সাংসদদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা নয়, বরং সংসদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর সরাসরি আঘাত। তিনি এই ঘটনাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যার মাধ্যমে বিরোধী দলের প্রতিবাদকে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তাঁর মতে, সংসদের মতো একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য এবং এটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করছে।এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস নেতৃত্ব তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের অন্যান্য নেতারাও তিওয়ারির সঙ্গে একমত হয়ে এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

Advertisements

সংসদে বিরোধী দলের সাংসদদের প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে, এবং তাঁদের জোরপূর্বক আটকানো গণতান্ত্রিক নীতির পরিপন্থী। কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদের কার্যক্রমে বিরোধী দলের অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই ঘটনায় মহিলা সাংসদদের প্রতি আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যা নিয়ে দলটি আরও কঠোর প্রতিবাদের পরিকল্পনা করছে।

সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে তিওয়ারির বক্তব্যের সমর্থনে কথা বলছেন, আবার কেউ কেউ এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, এই ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। ক্যামেরায় ধরা পড়া এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এলে তা আরও বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

কংগ্রেস এই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তাঁরা বলছেন, সংসদের নিরাপত্তার নামে সাংসদদের উপর এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিওয়ারি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পেছনে যারা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি স্পিকার ও ডেপুটি চেয়ারম্যানের কাছে এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন।

Realme-র ফোনে আর আসছে না Android 16 আপডেট, দেখে নিন তালিকায় আপনার মডেলটি আছে কিনা

এই ঘটনা ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন মোড় এনেছে। সংসদের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষার দাবি এখন জোরালো হচ্ছে। সরকার এই অভিযোগের জবাবে কী ব্যবস্থা নেয়, তা নিয়ে সকলের নজর রয়েছে। তবে তিওয়ারির বক্তব্য স্পষ্ট—এই ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে। আগামী দিনে এই বিতর্ক কতটা তীব্র হবে, তা সময়ই বলবে।