গারো হিলস কাউন্সিল কর্মীদের ৪২ মাস বেতন বন্ধ ইস্যুতে ক্ষোভ তৃণমূলের

মেঘালয়ের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক (TMC)। বিতর্কের ঝড় উঠেছে গারো হিলস স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদের (GHADC) কর্মীদের ৪২ মাস ধরে বেতন না দেওয়ার ঘটনা। অল ইন্ডিয়া তৃণমূল…

TMC protest in meghalaya

মেঘালয়ের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক (TMC)। বিতর্কের ঝড় উঠেছে গারো হিলস স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদের (GHADC) কর্মীদের ৪২ মাস ধরে বেতন না দেওয়ার ঘটনা। অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের (AITC) মেঘালয় শাখা এই ঘটনাকে ‘প্রশাসনিক উদাসীনতা’ এবং ‘শাসন ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ভাঙন’ বলে দাবি করেছে।

তৃণমূল নেতা তথা বিরোধী দলনেতা ড. মুকুল সাঙ্গমা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙ্গমার নেতৃত্বাধীন সরকার এবং GHADC কর্তৃপক্ষকে এই সংকটের জন্য দায়ী করে অবিলম্বে সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

   

এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।তৃণমূলের মেঘালয় শাখার অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “৪২ মাস ধরে বেতন বন্ধ! কনরাড সাঙ্গমার নেতৃত্বাধীন মেঘালয় সরকার GHADC-এর কর্মীদের প্রতি দীর্ঘস্থায়ী উদাসীনতা দেখিয়েছে, যাঁরা ৪২ মাস ধরে তাঁদের ন্যায্য বেতন পাননি। এটি প্রশাসনিক উদাসীনতা।

এই ঘটনা শাসন ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ভাঙন এবং কর্মীদের কল্যাণের প্রতি চরম অবহেলার প্রতিফলন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।” এই পোস্টে ড. মুকুল সাঙ্গমার বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, তিনি এই সংকটের জন্য রাজ্য সরকার এবং GHADC কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন এবং অবিলম্বে সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

গারো হিলস স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদ মেঘালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যা ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে। কিন্তু এই পরিষদের কর্মীরা গত ৪২ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় আর্থিক ও মানসিক সংকটে রয়েছেন। নন-গেজেটেড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (NGEA) জানিয়েছে, প্রায় ১০০০ কর্মী গত ৭ জুলাই থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

তাঁদের দাবি, অন্তত এক বছরের বকেয়া বেতন অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়া হোক। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।মুকুল সাঙ্গমা এই ঘটনাকে ‘অবিশ্বাস্য দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদগুলিকে (ADCs) দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

তাঁর মতে, এই সংকট শুধু কর্মীদের জীবনকে বিপন্ন করছে না, বরং ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে পরিষদের কার্যক্রম ও প্রশাসনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি মেঘালয় স্টেট ফিনান্স কমিশন অ্যাক্ট, ২০১২-এর বাস্তবায়ন না করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছেন, যা পরিষদগুলির আর্থিক স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে পারত।

Advertisements

তিনি আরও দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুত বিশেষ সহায়তা এখনও পূরণ হয়নি, যা এই সংকটের একটি বড় কারণ।এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। GHADC-এর চলমান মনসুন অধিবেশনে বিরোধী এমডিসিরা এই ইস্যুতে আলোচনার দাবি জানিয়ে ওয়াকআউট করেছেন।

তৃণমূলের পাঁচজন এমডিসি—চেরাক মোমিন, পার্দিনান্ড ডি শিরা, আলফনসিয়াস মারাক, রিনাল্ডো সাঙ্গমা, আগাসি মারাক—এবং বিজেপির একমাত্র এমডিসি বার্নার্ড মারাক এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, পরিষদ কর্তৃপক্ষ এই সংকট নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছে।সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে।

তৃণমূলের পোস্টে অনেকে সরকারের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন। এই সংকটের জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে পারস্পরিক দায়িত্ব ঠেলাঠেলির অভিযোগও উঠেছে। মুকুল সাঙ্গমা সতর্ক করে বলেছেন, যদি সরকার এই সংকটের সমাধানে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ না নেয়, তবে তাঁরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন।

তিনি এই ঘটনাকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি অবিচার এবং ষষ্ঠ তফসিলের মূল উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন।নির্বাচন কমিশন ও সরকারের উপর এখন চাপ বাড়ছে যাতে এই সংকটের দ্রুত সমাধান করা হয়।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভারতীয় কোচে ভরসা রাখল ফেডারেশন, নতুন দায়িত্বে খুশি জামিল

কর্মীদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে তাঁদের আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি। তবে এই ঘটনা মেঘালয়ের শাসন ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনাকে সামনে এনেছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য একটি বড় ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।