নয়াদিল্লি: ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় ভারতের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের পর এবার আমেরিকার থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার বিষয়ে পিছিয়ে আসছে নয়াদিল্লি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ সূত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি উঠে এসেছে। সূত্র উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা আমেরিকার প্রস্তাবিত এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার জেট কেনার বিষয়ে আগ্রহী নয় (India Rejects F-35 Jet Deal)।
ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির নজর এখন দেশের মাটিতে যৌথভাবে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নির্মাণ এবং ডিজাইন করার দিকে।
এদিকে, ট্রাম্পের হঠাৎ করে ঘোষিত ২৫ শতাংশ শুল্কের জবাবে ভারত আপাতত কোনও প্রত্যাঘাতমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তবে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কিছু ‘পলিসি সমন্বয়’ করার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। সূত্রের দাবি, আমেরিকার থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস, সোনার মতো পণ্য আমদানি বাড়ানো এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ভারত। এর মাধ্যমে আগামী ৩-৪ বছরে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমিয়ে আনতে চায় কেন্দ্র।
প্রতিরক্ষা খাতে বড় কোনও নতুন আমদানি আপাতত পরিকল্পনায় নেই বলেই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প সম্প্রতি তাঁর Truth Social প্ল্যাটফর্মে ভারতকে কটাক্ষ করে লেখেন, “ভারত আমাদের বন্ধু, তবে তারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপকারী দেশগুলির মধ্যে একটি। আমাদের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সবসময়ই ছিল অত্যন্ত সীমিত।” তিনি আরও বলেন, “তারা সবসময় রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনে। রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে মিলে তারা এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি গ্রাহক—যখন গোটা বিশ্ব চায় রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যালীলা বন্ধ করুক।”
ভারত ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেন, “আমার কিছু যায় আসে না ভারত কী করছে। ওরা চাইলে রাশিয়ার সঙ্গে মিলে নিজেদের মৃত অর্থনীতিকে ডুবিয়ে দিক।”
এই বয়ানে স্বাভাবিকভাবেই তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম নিয়েছে কূটনৈতিক মহলে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি ও ভাষাগত আক্রমণ ভারত-আমেরিকা কৌশলগত সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদি ছায়া ফেলতে পারে।