কলকাতা: অগাস্টের প্রথম প্রহরে বাংলার আকাশে মেঘের ঘনঘটা৷ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আজ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হয়েছে টানা ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস (Bengal Weather Forecast )।
একটানা বর্ষায় ভিজছে বাংলা, আরও কয়েক দিন চলবে বৃষ্টি
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একটানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দিনভর ভিজেছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই প্রবণতা আপাতত থামার নয়। আগামী ৬ অগাস্ট পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দমকা হাওয়া বইবে। পুরুলিয়া, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
উত্তরবঙ্গে বর্ষার গতি আরও তীব্র
উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি আরও জটিল। শুক্রবার থেকে ৬ অগাস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং জেলার বেশ কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার থেকে কোচবিহারেও প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস। দুই দিনাজপুরেও কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
শহর কলকাতা: বৃষ্টির ফাঁকে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি
কলকাতায় আজ দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে, এবং সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি। কিন্তু প্রকৃত অস্বস্তির উৎস, প্রচণ্ড আর্দ্রতা। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯৯ শতাংশ, ন্যূনতম ৯৫ শতাংশ, যা শহরবাসীর জীবনযাত্রায় একপ্রকার অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছে।
আপাতত স্থির থাকবে তাপমাত্রা
হাওয়া অফিস স্পষ্ট জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বা উত্তরবঙ্গ—কোনও অঞ্চলেই এখনই তাপমাত্রায় বড়সড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বর্ষার প্রভাবে সামগ্রিকভাবে আবহাওয়া থাকবে অনিশ্চিত, আর্দ্র এবং অস্থির।
নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা
এই অবস্থায় রাজ্যবাসীকে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বজ্রবিদ্যুৎ চলাকালীন খোলা মাঠ বা জলাশয়ের কাছে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও নজরদারি চালু রয়েছে বিপদসংকেত অনুযায়ী।
বর্ষা এখন শুধু মৌসুমি সৌন্দর্যের বাহক নয়, রীতিমতো প্রশাসনিক নজরদারির বিষয় হয়ে উঠেছে। দক্ষিণে বিক্ষিপ্ত বজ্রবৃষ্টি, উত্তরে টানা ভারী বর্ষণ, এভাবেই অগাস্টে পা রাখল বাংলা। এখন দেখার, আবহাওয়ার এই রূপরেখা কতটা গভীরে যায় এবং তার প্রভাব কতটা বিস্তৃত হয় জনজীবনে।