ভারত-রাশিয়া দুটোই মৃত অর্থনীতি! চাইলে একসঙ্গেই ডুবে যাক’, ফের খোঁচা ট্রাম্পের

ওয়াশিংটন: ভারতের উপর কড়া আমদানি শুল্ক চাপানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে ভারত ও রাশিয়াকে একসঙ্গে আক্রমণ করলেন। ট্রুথ…

Trump hits out at India, Russia

ওয়াশিংটন: ভারতের উপর কড়া আমদানি শুল্ক চাপানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার এক বিস্ফোরক মন্তব্যে ভারত ও রাশিয়াকে একসঙ্গে আক্রমণ করলেন। ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি দু’দেশকে কটাক্ষ করে বলেন, “ভারত-রাশিয়া দু’টোই মৃত অর্থনীতি। তারা চাইলে একসঙ্গে তলিয়ে যাক, আমার কিছু যায় আসে না।(Trump hits out at India, Russia)”

এই বক্তব্য ঘিরে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। আগেই ঘোষণা হয়েছিল, ১ অগস্ট থেকে কার্যকর হচ্ছে ভারতীয় আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক। এবার সরাসরি রুশ সম্পর্ক ঘিরে ভারতকে বিঁধে দিলেন ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, ভারত বিশ্বে ‘সবচেয়ে বেশি আমদানি শুল্ক’ আরোপকারী দেশগুলোর একটি এবং সে কারণেই দুই দেশের মধ্যে “ব্যবসা বললেই কিছু নেই।”

   

রাশিয়াকেও রেহাই নয়, সরাসরি হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

পূর্বতন রুশ রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভ সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন, ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে ‘চরমপন্থী’ আল্টিমেটামের খেলা খেলছেন, যা এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের মুখেও ঠেলে দিতে পারে। তারই প্রত্যুত্তরে ট্রাম্প বলেন, “মেদভেদেভ একজন ব্যর্থ নেতা, যিনি এখনও ভাবেন তিনি রাষ্ট্রপতি। তাঁকে বলুন, নিজের ভাষা সামলান। খুবই বিপজ্জনক এলাকায় পা রাখছেন তিনি।”

ভারতের পাল্টা বার্তা: কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোগকে রক্ষায় ‘দৃঢ় পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে

ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপের পর ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল পরিমিত অথচ স্পষ্ট। এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, “আমরা আমেরিকার সঙ্গে একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিক উপকারে ভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ভারত সেই লক্ষ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

Advertisements

তবে তার সঙ্গেই দিল্লির হুঁশিয়ারি, দেশের কৃষক, ছোট উদ্যোক্তা ও MSME সেক্টরের স্বার্থ রক্ষায় সরকার ‘প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ’ নেবে। উল্লেখযোগ্যভাবে ভারত সম্প্রতি ব্রিটেনের সঙ্গে এক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে, যেখানে বিদেশি বাজারে প্রবেশ এবং দেশীয় স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষা, দু’টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক বার্তার আড়ালে বাণিজ্য যুদ্ধের পদধ্বনি?

ট্রাম্পের এই কটাক্ষ নিছকই বাগ্মিতা, না কি ২০২4-এ নির্বাচনে হেরে ফের রাজনীতির মঞ্চে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা—তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে। তবে এই পর্বে যা স্পষ্ট, তা হল দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে চাপানউতোর ফের জোরালো হচ্ছে।

ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের দীর্ঘদিনের অস্বস্তি এবার ট্রাম্পের ভাষায় রূপ পেল অশ্রুতপূর্ব কটাক্ষে। ফলে, এই বিতণ্ডা কি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনার ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে—সেই উত্তর সময়ই দেবে।