ভিড়ের চাপে অতিষ্ঠ শিয়ালদহ ডিভিশন, ট্রেন পরিষেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের

কলকাতা: প্রতিদিনই ভিড়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে শিয়ালদহ ডিভিশনের (Sealdah Division) যাত্রীদের। মেইন লাইন হোক বা দক্ষিণ শাখা— প্রতিটি ট্রেনেই ঠাসাঠাসি ভিড় নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে।…

ভিড়ের চাপে অতিষ্ঠ শিয়ালদহ ডিভিশন, ট্রেন পরিষেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের

কলকাতা: প্রতিদিনই ভিড়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে শিয়ালদহ ডিভিশনের (Sealdah Division) যাত্রীদের। মেইন লাইন হোক বা দক্ষিণ শাখা— প্রতিটি ট্রেনেই ঠাসাঠাসি ভিড় নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে। সেই ভিড় সামাল দিতে অবশেষে বড় সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব রেল। বাড়ানো হচ্ছে ট্রেন সংখ্যা। বিশেষ করে দমদম ক্যান্টনমেন্ট, বনগাঁ, ক্যানিং, বারাসত, ডায়মন্ড হারবার এবং বিধাননগর শাখায় ট্রেন পরিষেবা বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে শিয়ালদহ ডিআরএম রাজীব সাক্সেনার নেতৃত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিভিশনের বিভিন্ন শীর্ষ আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে পরিষ্কার উঠে এসেছে গত কয়েকমাসে যাত্রীসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। শিয়ালদহ ডিভিশনে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ১৮ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। শুধু বিধাননগর স্টেশন থেকেই প্রতিদিন ট্রেনে ওঠানামা করেন ১.৭ লক্ষেরও বেশি যাত্রী।

   

এই প্রবল যাত্রীচাপ সামাল দিতে শিয়ালদহ ডিভিশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় অন্তত ১০টি অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ ডিভিশনে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৯২৫টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু যাত্রীসংখ্যার নিরিখে সেই সংখ্যা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন রেলকর্তারা।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিয়ালদহ স্টেশনের উপর চাপ কমাতে ট্রেনের কিছু রুট বদলে দেওয়া হবে। উদাহরণস্বরূপ, শিয়ালদহের বদলে বিধাননগর স্টেশন থেকে কল্যাণী পর্যন্ত দু’টি নতুন ট্রেন চালানো শুরু হবে। পাশাপাশি কল্যাণী থেকেও ট্রেন ছেড়ে বিধাননগরে এসে থামবে। এর ফলে শিয়ালদহ স্টেশনের যাত্রীসংখ্যার কিছুটা ভার লাঘব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, বিধাননগর সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিকে ‘হকার মুক্ত’ করার কাজ শুরু হয়েছে। বিধাননগর স্টেশন থেকে ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। যাত্রী সুরক্ষা ও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা উন্নত করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল।

Advertisements

রেল সূত্রে খবর, রেলবোর্ড থেকেও ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র এসে গিয়েছে। ফলে দ্রুত নতুন ট্রেন পরিষেবা শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি রুটে চলা ট্রেনের বর্তমান সংখ্যা ও সময়সূচি নিয়ে একটি পৃথক রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, যাতে নতুন পরিষেবা আরও পরিকল্পিতভাবে শুরু করা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতা মেট্রোপলিটন অঞ্চলের জনসংখ্যা ও শহরতলির বিস্তারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাবার্বান রেল পরিষেবা না বাড়ালে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। শিয়ালদহ ডিভিশনের এই পদক্ষেপ সেই দিকেই একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন তাঁরা।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে একদিকে যেমন যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে রেল পরিষেবার উপর চাপও কিছুটা হ্রাস পাবে বলে আশাবাদী রেল কর্তৃপক্ষ।