নয়াদিল্লি: ভারতের বিদেশনীতি ও কৌশলগত অবস্থান নিয়ে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ ও আক্রমণের পাল্টা জবাব এল সরকারি মহল থেকে তীব্র, প্রত্যয়ী এবং রাজনৈতিকভাবে স্পষ্ট। মার্কিন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরনো যুদ্ধবিরতির দাবি নিয়ে রাহুল যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর “ট্রাম্পকে সংসদে মিথ্যাবাদী বলার” দাবি তোলেন, তখনই বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সংসদ-চত্বরে (Govt Slams Rahul Gandhi)৷
শীর্ষ আধিকারিকের কড়া প্রতিক্রিয়া
সরকারি এক শীর্ষ আধিকারিকের কড়া প্রতিক্রিয়া, “এটি রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক অপরিণততা ও কূটনৈতিক বোধহীনতার পরিচয়। সংসদে এই ধরনের ‘আক্রমণাত্মক কিশোরসুলভ’ দাবি দেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানকেই দুর্বল করে।”
প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান আগে থেকেই পরিষ্কার ছিল, “ভারতকে যুদ্ধ থামাতে কোনও বিদেশি রাষ্ট্রনেতা বলেননি।” পাশাপাশি, বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করও লোকসভায় রেকর্ডে এনেছেন যে অপারেশন সিন্ধূরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। এই সংক্রান্ত সব জল্পনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন তিনি।
‘গুলির জবাব গোলায়’: মোদীর স্পষ্ট বার্তা আমেরিকাকে
পাকিস্তানের সম্ভাব্য হামলার খবরে মার্কিন সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স যখন মে মাসে প্রধানমন্ত্রীকে বারবার ফোন করার চেষ্টা করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর জবাব ছিল অকপট ও কঠোর, “পাকিস্তান বড় হামলা করলে, তার বহুগুণ বড় জবাব পাবে। আমরা গুলির জবাব গোলায় দেব।”
এমন সময়ে রাহুলের দাবি যে প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের ‘মিথ্যাবাদী’ তকমা সংসদে দেবেন, তা স্পষ্টতই রাষ্ট্রের মর্যাদা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের পরিপন্থী, এমনটাই মত সরকারি মহলের।
‘রিং অফ ফায়ার’ কূটনীতি নয়, স্থিরতা চায়
সরকারি সূত্রের পর্যবেক্ষণ, “যে কংগ্রেস নিজে দশকের পর দশক সরকার চালিয়েছে, তারা নিশ্চয়ই জানে রাষ্ট্রনেতারা কীভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালনা করেন। পার্লামেন্টary নাটকের জন্য কূটনীতি ব্যবহার বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক শুধুমাত্র ট্রেড বা ট্রাম্পের একক মন্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ডোকলাম সঙ্কটের সময় আমেরিকার ভারতপন্থী অবস্থান কিংবা প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিনিময়, এই কৌশলগত বন্ধুত্ব বহুস্তরীয় ও দীর্ঘমেয়াদি।
অভিযোগের রাজনীতি, না বিদেশনীতির অজ্ঞানতা?
রাহুল গান্ধী পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সাম্প্রতিক আমেরিকা সফর এবং সরকারপক্ষের তথাকথিত ‘নতুন স্বাভাবিক’ (New Normal) কৌশল নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। তাঁর দাবি, এই সফরই প্রমাণ করে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়েছে।
কিন্তু সরকারি মহলের পাল্টা বক্তব্য, “কূটনৈতিক পরিসরে প্রতিপক্ষের সফর মানেই পরাজয় নয়। কূটনীতি ধৈর্য ও কৌশলের খেলা, সেটা বোধহয় রাহুল এখনও বোঝেননি।”