বিহারের রাজধানী পটনার মসৌড়ি অঞ্চলে একটি অদ্ভুত ও গুরুতর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে (Dog Babu)। যেখানে একটি কুকুরের নামে আবাসিক শংসাপত্র জারি করা হয়েছিল। শংসাপত্রটি ‘ডগ বাবু’ নামে জারি করা হয়, যেখানে বাবার নাম হিসেবে ‘কুত্তা বাবু’ এবং মায়ের নাম হিসেবে ‘কুতিয়া দেবী’ উল্লেখ করা হয়।
এই ঘটনা সামনে আসার পর পটনার জেলা প্রশাসক (ডিএম) থিয়াগরাজন এস.এম. এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই ঘটনা বিহারের রাইট টু পাবলিক সার্ভিসেস (আরটিপিএস) পোর্টালের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।২০২৫ সালের ২৪ জুলাই মসৌড়ি অঞ্চলের আরটিপিএস পোর্টালের মাধ্যমে এই শংসাপত্র জারি করা হয়।
শংসাপত্রে একটি গোল্ডেন রিট্রিভার কুকুরের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এটি রাজস্ব কর্মকর্তা মুরারি চৌহানের ডিজিটাল স্বাক্ষরে স্বাক্ষরিত ছিল। শংসাপত্রে উল্লিখিত ঠিকানা ছিল কৌলিচক, ওয়ার্ড নম্বর ১৫, নগর পরিষদ মসৌড়ি, পটনা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর শংসাপত্রটি মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে, অর্থাৎ বিকেল ৩:৫৬ থেকে ৩:৫৮ মিনিটে বাতিল করা হয়।
তবে, এর স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, যা প্রশাসনের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।জেলা প্রশাসক থিয়াগরাজন এস.এম. এই ঘটনাকে ‘গুরুতর এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পিছনে কিছু ‘দুষ্টু উপাদান’ জড়িত থাকতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা আবেদনকারী, কম্পিউটার অপারেটর এবং শংসাপত্র জারি করা রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মসৌড়ি থানায় এফআইআর দায়ের করেছি।
সাইবার পুলিশের সহায়তায় আবেদনকারীকে শনাক্ত করা হচ্ছে। দোষী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, মসৌড়ি উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তাকে (এসডিও) এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া নথিগুলো দিল্লির এক মহিলার আধার কার্ড এবং অন্যান্য নথির ছিল, যা অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ঘটনা আরটিপিএস পোর্টালের যাচাই প্রক্রিয়ার দুর্বলতাকে তুলে ধরেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবেদনপত্রে নাম, ঠিকানা এবং ছবি যাচাই না করে এবং আধার কার্ডের বিবরণ মেলানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণে এই ভুল ঘটেছে। রাজস্ব কর্মকর্তা মুরারি চৌহানকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং একজন আইটি সহকারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এফআইআর (৬০৮/২৫) ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৬(২), ৩৩৬(৩), ৩৩৮ এবং ৩৪০(২) ধারায় দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনা বিহারের চলমান নির্বাচনী তালিকা সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার সময় প্রকাশ্যে আসে, যা নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকায় নতুন নাম যোগ, সংশোধন এবং অযোগ্য নাম বাদ দেওয়া হয়। ‘ডগ বাবু’র শংসাপত্র ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়, যেখানে অনেকে এটিকে প্রশাসনের অদক্ষতা এবং পোর্টালের নিরাপত্তা ত্রুটির প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লোকসভায় ঝড় তুললেন সায়নী, তিন ভাষায় আক্রমণ-বাণী, ব্যঙ্গ আর আবেগ!
বিহার প্রশাসনিক সংস্কার মিশন সোসাইটি সমস্ত জেলা প্রশাসন কঠোরভাবে এনআইসি-এর সার্ভিস প্লাস প্ল্যাটফর্মে যাচাই প্রক্রিয়া জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের জালিয়াতি রোধে এআই সরঞ্জামের ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।