ডার্বির পরে ধাক্কা খাওয়ার পুরনো রেওয়াজকে বুড়ো আঙুল দেখাল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবসের দিনে সবুজ-মেরুন সমর্থকরা ইতিহাস উদযাপনে ব্যস্ত। সেখানেই বেহালার বিরুদ্ধে গোলঝড় তুলে কলকাতা লিগে নিজেদের দাপট আরও জোরালোভাবে জানান দিল লাল-হলুদ শিবির। বারাকপুরের ম্যাচে বেহালা এসএসকে একতরফা ম্যাচে ৬-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল বিনো জর্জের ছেলেরা।
ডার্বির দাপট যে শুধুমাত্র এক দিনের জন্য নয়, তা প্রমাণ করে দিলেন বিনো জর্জ। ইস্টবেঙ্গলের ছন্দে থাকা খেলোয়াড়রা যেন আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে নামেন এদিন। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণের ঢেউ তুলতে শুরু করে তারা। বল পজিশন হোক বা কাউন্টার অ্যাটাক, সবদিক থেকেই স্পষ্ট ছিল, কে বড় দল মাঠে।
১৮ মিনিটে প্রথম ব্রেকথ্রু আসে চাকু মাণ্ডির পা থেকে। তন্ময় ঘোষের নিখুঁত কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন তরুণ ফরোয়ার্ড। সেই গোলের পর যেন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিপক্ষ বেহালার রক্ষণভাগ ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করে। ৩০ মিনিটে ডেভিড লালহানসাঙ্গারার নিখুঁত ফিনিশিং দ্বিতীয় গোল এনে দেয় লাল-হলুদ শিবিরকে।
এর ঠিক তিন মিনিট পর আরও একটি গোল আসে, এইবার গোলদাতা মহম্মদ আশিক। ৩-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল।
বিরতির পরেও খেলায় কোনও হ্রাস দেখা যায়নি ইস্টবেঙ্গলের আগ্রাসনে। বরং দ্বিতীয়ার্ধে আরও জ্বলে ওঠে তারা। বেহালার রক্ষণ একপ্রকার অসহায় আত্মসমর্পণ করে। ৭১ থেকে ৭৫ মিনিটের মাঝে আসে আরও তিনটি গোলনাসিব রহমান, মার্ক জোথানপুইয়া এবং গুইতে ভানলালপেকা একে একে স্কোরশিটে নাম লেখান। মাত্র চার মিনিটের ব্যবধানে ম্যাচকে একতরফা বানিয়ে দেন এই তিন ফুটবলার।
নাসিবের গোলটি আসে দুর্দান্ত একটি লং রেঞ্জ শট থেকে, যা প্রতিপক্ষ গোলকিপার কিছুই করতে পারেননি। পরের গোল দুটি আসে টিম ওয়ার্ক এবং ফ্ল্যাঙ্ক প্লে-এর নিখুঁত মিশেল থেকে।
ইস্টবেঙ্গল কোচ বিনো জর্জ ম্যাচ শেষে বলেন, “ডার্বির পর এই ম্যাচটা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানতাম, আত্মতুষ্ট হলে বিপদ হতে পারে। কিন্তু ছেলেরা আজ ঠিক যেমনটা চাইছিলাম, সেইভাবেই খেলেছে। গোল স্কোরিংয়ে বৈচিত্র্য এসেছে, সেটাও ভালো দিক।”
এই জয়ের ফলে পয়েন্ট তালিকায় বড়সড় লাফ দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানকে পেছনে ফেলে লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এল। বড় ব্যবধানে জয়ের ফলে গোল পার্থক্যেও উন্নতি হল লাল-হলুদদের।