আইএসএল ট্রফি জেতা হোক কিংবা ধারাবাহিক ভাবে সেমিফাইনাল খেলার উপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় বুঝেছিলেন মানোলো মার্কুয়েজ (Manolo Marquez)। ২০২০ সালে হায়দরাবাদ এফসির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football Team) প্রতি তাঁর বিশ্বাসও গড়ে উঠেছিল। ২০২৪ সালে ইগর স্টিমাচের পর জাতীয় দলের কোচের পদে বসেছিলেন ৫৬ বছর বয়সী এই কোচ। স্পেনের ক্যানারি দ্বীপে ছুটি কাটাতে কাটাতেই জাতীয় দলের কোচের পদে আবেদন করেন তিনি।
কিন্তু জাতীয় দলের কোচ হিসেবে মাত্র আট ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয়, চারটি ড্র এবং তিনটিতে পরাজিত হয়। পাঁচ ম্যাচের প্রতিপক্ষই ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ভারতের চেয়ে নিচে। তবে ফলাফলই তাঁর আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দেয়। তিনি বলেন, “আমার জাতীয় দলের সময়টা খুব খারাপ ছিল। এটা আমার কেরিয়ারের ‘ব্ল্যাক পয়েন্ট’, ভারতে যা আমি আগে কখনও অনুভব করিনি।”
মার্কুয়েজ শুরুতেই বলেছিলেন সঠিক খেলোয়াড়দের দল গঠনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু তিনি নিজেই স্বীকার করেন, পাঁচটি ফিফা উইন্ডোতে ৪৯ জন খেলোয়াড় ডাকলে বোঝা যায়, সেই চ্যালেঞ্জে তিনি সফল হননি। তিনি যোগ করেন, “এটা আমার ভুল ছিল। আমি দলের ভেতরে একটা পরিচিত কাঠামো বা কোর গড়ে তুলতে পারিনি।”
জাতীয় দলে গোলের অভাবে পড়ে ছুটি কাটাতে থাকা সুনীল ছেত্রীকে আন্তর্জাতিক অবসর ভেঙে ফিরিয়ে আনেন স্প্যানিশ কোচ। যদিও তিনি মনে করেন, এটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না। সেই প্রসঙ্গে মার্কুয়েজ বলেন, “হ্যাঁ, এটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কিন্তু ছেত্রী আইএসএলে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ১৪ গোল ও ২ অ্যাসিস্ট করেছিলেন। তিনি যদি বাংলাদেশ ম্যাচে সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতেন, হয়তো গল্পটাই অন্যরকম হতো।”
তিনি এপ্রিলেই ফেডারেশনকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্লে-অফ শেষেই তিনি সরে যেতে চান। কিন্তু সর্ব ভারতীয় ফুটবল সংস্থা তখন তাঁকে অনুরোধ করে জুন পর্যন্ত থেকে যেতে। তিনি বলেন, “আমি তখনই বলেছিলাম এটা গোপন রাখা যাবে না। ফুটবল দুনিয়ায় এই ধরনের খবর চাপা থাকে না।”
এখন পুরনো অতীত ভুলে মনোলো মার্কুয়েজ চাইছেন নতুন করে শুরু করতে। এফসি গোয়ার (FC Goa) কোচ হিসেবে তাঁর চুক্তি নবীকরণ হয়েছে। এবার তাঁর সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ—এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস লিগ ২ যোগ্যতা অর্জন। ওমানের আল-সিব ক্লাবের বিরুদ্ধে পরের মাসেই সেই ম্যাচ। মার্কুয়েজ বলেন, “আমি সত্যিই উন্মুখ এই নতুন অভিজ্ঞতার জন্য। এটি আমার জন্য একেবারে নতুন দিগন্ত।”
তবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ২০২৫-২৬ মরসুম শুরু হওয়ার সম্ভাব্য বিলম্ব নিয়েও তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে বলেন, “এবারের লিগ যদি দেরিতে শুরু হয়, তবে ক্লাবগুলোর জন্য ২৭টি ম্যাচ খেলা কঠিন হয়ে পড়বে। আর সেটাই এশিয়ান প্রতিযোগিতার যোগ্যতার জন্য দরকার। তখন তিন দিনে এক ম্যাচ খেলতে হতে পারে, সেক্ষত্রে খেলোয়াড়দের জন্য বিপজ্জনক।”
জাতীয় দলের হতাশার পর এবার তাঁর নজর ক্লাব ফুটবলে সম্মান পুনরুদ্ধারের দিকে। সেই সঙ্গে এশিয়ার মঞ্চে এফসি গোয়াকে নিয়ে যেতে চান এক নতুন উচ্চতায়।
Manolo Marquez reflects on his tough tenure as Indian Football Team coach