‘খেলার মাঠে সন্ত্রাসের ছায়া যেন না পড়ে’, বিবৃতি মহারাজের

এশিয়া কাপে ভারত এবং পাকিস্তানের (Sourav Ganguly) একই গ্রুপে পড়ার ঘটনায় ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং ক্রিকেটের ‘মহারাজ’ সৌরভ গাঙ্গুলী একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,…

Sourav Ganguly on asia cup

এশিয়া কাপে ভারত এবং পাকিস্তানের (Sourav Ganguly) একই গ্রুপে পড়ার ঘটনায় ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং ক্রিকেটের ‘মহারাজ’ সৌরভ গাঙ্গুলী একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমি এতে কোনো সমস্যা দেখি না। খেলা চলতেই হবে। তবে, পহেলগাঁওয়ের মতো ঘটনা ঘটা উচিত নয়, কিন্তু খেলা অবশ্যই চলতে হবে।

সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই; এটি বন্ধ করতে হবে। ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে… খেলাধুলা অবশ্যই খেলা উচিত।” গাঙ্গুলীর এই মন্তব্য ক্রিকেটের চেতনাকে অক্ষুণ্ণ রাখার পাশাপাশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

   

এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী ঘটনাগুলি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর ছায়া ফেলেছে।

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি

এশিয়া কাপ ২০২৫-এর গ্রুপ পর্বে ভারত এবং পাকিস্তান একই গ্রুপে (গ্রুপ এ) স্থান পেয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাও রয়েছে। এই ম্যাচটি ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি, যা কেবল খেলার মাঠে নয়, বরং রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটেও গভীর তাৎপর্য বহন করে।

গাঙ্গুলীর মন্তব্য এই ম্যাচের প্রতি ভক্তদের উৎসাহের মধ্যে একটি সংযমী এবং দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে খেলাধুলা এবং সন্ত্রাসকে একসঙ্গে মেশানো উচিত নয়। তাঁর মতে, ক্রিকেট একটি সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিতে ভূমিকা রাখতে পারে, তবে সন্ত্রাসের মতো গুরুতর বিষয়ে কোনো আপস করা যায় না।

পহেলগাঁওয়ের প্রেক্ষাপট

গাঙ্গুলীর মন্তব্যে উল্লেখিত ‘পহেলগাঁওয়ের’ প্রসঙ্গটি জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার দিকে ইঙ্গিত করে। যে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন। এই প্রেক্ষাপটে গাঙ্গুলীর বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থানের পক্ষে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।” এই মন্তব্যে তিনি ক্রিকেটকে রাজনৈতিক উত্তেজনা থেকে আলাদা রাখার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, যা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-এর দীর্ঘদিনের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ক্রিকেট ও রাজনীতির সংঘাত

ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ সবসময়ই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোচিত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর থেকে ভারত দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলছে না। তবে, আইসিসি ইভেন্ট এবং এশিয়া কাপের মতো বহুপাক্ষিক টুর্নামেন্টে দুই দল মুখোমুখি হয়।

Advertisements

এই ম্যাচগুলি ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, কিন্তু একই সঙ্গে সীমান্তে হামলার কারণে রাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ায়। গাঙ্গুলীর মন্তব্য এই দ্বৈত প্রেক্ষাপটে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা। তিনি ক্রিকেটকে একটি খেলা হিসেবে দেখতে চান, যা মানুষের মধ্যে ঐক্য ও আনন্দ আনতে পারে, তবে সন্ত্রাসের মতো জঘন্য কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের পক্ষে।

ডায়মন্ড হারবার কেন? খোলসা করলেন লুকা মাজসেন

গাঙ্গুলীর ভূমিকা ও তাৎপর্য

ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীর এই মন্তব্য ক্রিকেট সম্প্রদায় এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি বিসিসিআই-এর প্রাক্তন সভাপতি এবং ভারতীয় দলের সফল অধিনায়ক হিসেবে ক্রিকেটের বৈশ্বিক মঞ্চে ভারতের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছেন।

তাঁর এই বক্তব্য ক্রিকেটের চেতনাকে সমুন্নত রাখার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। তিনি বলেন, “খেলা চলতে হবে,” যা ক্রিকেটের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতু বজায় রাখার আহ্বান। একই সঙ্গে, তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা বলে ভারতের জাতীয় স্বার্থের প্রতি অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন।

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি বড় ঘটনা। সৌরভ গাঙ্গুলীর মন্তব্য এই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে খেলাধুলার চেতনা এবং জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার একটি প্রচেষ্টা। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে ক্রিকেট একটি খেলা, যা মানুষের মধ্যে আনন্দ এবং ঐক্য আনতে পারে, কিন্তু সন্ত্রাসের মতো জঘন্য কার্যকলাপের কোনো স্থান নেই।

তাঁর এই বক্তব্য ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটের রাজনৈতিক সংবেদনশীলতার মধ্যে একটি সুষ্ঠু দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের জন্য ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, এবং গাঙ্গুলীর মন্তব্য নিশ্চিত করেছে যে খেলার মাঠে সন্ত্রাসের ছায়া পড়া উচিত নয়।