রবিবার গুজরাটের ভদোদরায় গতি শক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং( Rajnath Singh)। তিনি বলেন, আধুনিক যুদ্ধ “বন্দুক ও বুলেট দিয়ে জেতা যায় না”। বিভিন্ন সংস্থার সরবরাহ ব্যবস্থাপনাকে অপারেশন সিন্দুরের সাফল্যের নির্ধারক কারণ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
রাজনাথ তার ভাষণে বলেন যে সরবরাহ ব্যবস্থাপনা আধুনিক যুদ্ধে একটি দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে। তবে সরবরাহের অর্থ কেবল পণ্য সরবরাহ করা নয়, এবং এটিকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
তাঁর কথায়, “বিশ্ব যে গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে তা চিত্তাকর্ষক এবং আশ্চর্যজনক। প্রতিরক্ষা খাতও রূপান্তরিত হচ্ছে, এবং যুদ্ধের পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আজকের যুগে, যুদ্ধ কেবল বন্দুক ও বুলেট দিয়ে জেতা হয় না, বরং সময়সীমাবদ্ধ সরবরাহের মাধ্যমে জেতা হয়।”
অপারেশন সিন্দুরের উদাহরণ টেনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরোও বলেন, “অপারেশন সিন্দুরের সাফল্যের ক্ষেত্রে লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা একটি নির্ধারক উপাদান ছিল। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে একত্রিত করা থেকে শুরু করে সঠিক সময়ে সঠিক স্থানে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থা যেভাবে রসদ ব্যবস্থাপনা করেছে তা অভিযানের সাফল্যের ক্ষেত্রে একটি নির্ধারক উপাদান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।”
তিনি জানান, দেশের সীমান্ত তখনই শক্তিশালী হবে যখন তাদের রসদ আরও শক্তিশালী হবে। যুদ্ধ, জাতীয় দুর্যোগ বা মহামারী যাই হোক না কেন, একটি দেশের জন্য তার লজিস্টিক সাপোর্ট চেইনকে “স্থিতিশীল, সুরক্ষিত এবং সক্ষম” রাখা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
রাজনাথ জানান, সেনাবাহিনীর জন্য লজিস্টিক মানে অস্ত্র, জ্বালানি, রেশন এবং ওষুধের সময়মত সরবরাহ, কিন্তু নৌবাহিনীর জন্য এর অর্থ হল জাহাজগুলিতে খুচরা যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘গতি শক্তি’ উদ্যোগের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। এই উদ্যোগকে তিনি ভারতের ‘লজিস্টিক ইন্টিগ্রেশন’-এর ভবিষ্যৎ রূপ হিসেবে অভিহিত করেন।
রাজনাথের এই বক্তব্য সামরিক চিন্তাধারার একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে যুদ্ধক্ষেত্রের বিজয় আর শুধু অস্ত্রশস্ত্রে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নির্ভর করে প্রযুক্তি, সময় ও রসদের উপর।