অগাস্ট থেকেই রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি বিরোধী আন্দোলনে নামার হুঙ্কার শুভেন্দুর

কলকাতা: অগাস্ট মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। নির্বাচন কমিশনের তরফে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে  অগাস্ট থেকেই রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি…

suvendu slams police

কলকাতা: অগাস্ট মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ। নির্বাচন কমিশনের তরফে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে  অগাস্ট থেকেই রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি বিরোধী আন্দোলনে নামার হুঙ্কার দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)৷

নজরুল মঞ্চে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) দের ট্রেনিং চলছে জোরকদমে। সংশোধন সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক যেমন—নতুন ভোটার নাম অন্তর্ভুক্তি, পুরনো নাম বাদ দেওয়া, ঠিকানার সংশোধন ইত্যাদি বিষয়ে বিশদে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে BLO-দের হাতে তুলে দেওয়া বইতে।

   

এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য রাজনীতিতে ফের চড়ছে উত্তাপ। বিজেপির তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, “বাংলার ভোটার তালিকা থেকে এবার বাদ পড়বে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের নাম।” তাঁর হুঁশিয়ারি, বিহারে যেখানে ৫০ লক্ষ ভুয়ো নাম বাদ পড়েছে, বাংলায় সেই সংখ্যা হতে পারে ১ কোটি ২৫ লক্ষ! বিজেপির বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের নাম বেআইনিভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, এবার সেই গাফিলতি খতিয়ে দেখা জরুরি।

শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পাল্টা দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত শুভেন্দুবাবু একজন রোহিঙ্গাও দেখাতে পারেননি। শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলায় সংবিধান মেনে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী তালিকা সংশোধন হয়, কারও জাতি, ধর্ম বা ভাষা দেখে নয়।”

তবে বিজেপি যে এই ইস্যুকে বড়সড় আন্দোলনের হাতিয়ার করতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, “১৭ অগাস্ট থেকে শুরু হবে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন। আমাদের দাবি, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিমুক্ত পশ্চিমবঙ্গ।” দলের তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় জনসভা ও মিছিলের মাধ্যমে এই দাবিকে তুলে ধরা হবে সাধারণ মানুষের কাছে।

Advertisements

নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, অগাস্ট মাসে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং নভেম্বর নাগাদ তা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। BLO-দের প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সংশোধনের ক্ষেত্রে আধার লিঙ্কিং, জন্মসনদ যাচাই, ঠিকানা প্রমাণের কড়া নির্দেশিকা মানতে বলা হয়েছে। তবে কারও নাগরিকত্ব প্রমাণ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয় বলেই জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ইস্যুকে ঘিরে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি তীব্র জনমত গড়ে তুলতে চাইছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট জানিয়েছে, এই ধরনের “বিভাজনমূলক রাজনীতি” তারা বরদাস্ত করবে না।

সামনে সময় বলবে, ভোটার তালিকা সংশোধনের এই পর্বে আদৌ কতজনের নাম বাদ যায় বা নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে তার আগে রাজনীতির পারদ যে চড়তে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।