কয়েকদিন আগেই আয়ুর্বেদ (Ayurveda) চিকিৎসা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার সাথে সাথে আয়ুর্বেদ হাসপাতাল এবং কলেজের নাম জায়গা পেয়েছে মেট্রো রেলের বোর্ডে। আজ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানে আয়ুরমিত্র আয়ুর্বেদ চিকিৎসালয়ের উদ্যোগে ভেষজ ও অন্যান্য উদ্ভিদের চারা বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই অনুষ্ঠান স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ এবং আয়ুর্বেদ সম্পর্কে আগ্রহ তৈরী করেছে। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ, বিধায়ক মলয় মজুমদার, সাংবাদিক দেবদূত ঘোষঠাকুর, এবং আয়ুরমিত্রের প্রধান উদ্যোক্তা গৌতম ব্রহ্ম ও সুচেতা ঘোষ।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. প্রদ্যুৎ কর্মকারের সঙ্গে কথোপকথন এবং তাঁর ‘নাড়ি ধরে রোগ নির্ণয়’-এর অভিজ্ঞতা সকলের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা এবং ভেষজ গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।কুনাল ঘোষ এই অনুষ্ঠানে তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, “আয়ুরমিত্রের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
ডা. প্রদ্যুৎ কর্মকারের সঙ্গে কথোপকথন এবং তাঁর নাড়ি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়া সত্যিই বিস্ময়কর। আয়ুর্বেদের মতো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির এই ধরনের প্রচার এবং ভেষজ গাছের চারা বিতরণের মাধ্যমে প্রকৃতি ও উদ্ভিদভিত্তিক চিকিৎসার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।” তিনি আরও জানান, আয়ুর্বেদ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
আয়ুরমিত্র আয়ুর্বেদ চিকিৎসালয় গাঙ্গুলিবাগানে ভেষজ গাছের চারা বিতরণের এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রাকৃতিক চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গাছের চারা, যেমন নিম, তুলসী, অশ্বগন্ধা, এবং শতমূলী, বিতরণ করা হয়েছে। এই গাছগুলি আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং সাধারণ মানুষের বাড়িতে এগুলি রোপণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখা সম্ভব।
গৌতম ব্রহ্ম এবং সুচেতা ঘোষের নেতৃত্বে এই উদ্যোগটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রকৃতি ও আয়ুর্বেদের প্রতি আগ্রহ জাগিয়েছে।আয়ুর্বেদ, যার অর্থ সংস্কৃতে ‘জীবনের জ্ঞান’, প্রায় ৫০০০ বছরের পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত এবং ভেষজ উদ্ভিদ, যোগ, ধ্যান, এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখার উপর জোর দেয়।
কিন্তু আধুনিক অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার প্রভাবে এই প্রাচীন পদ্ধতি কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে আয়ুর্বেদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে, আয়ুরমিত্রের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়ুর্বেদের প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ডা. প্রদ্যুৎ কর্মকারের নাড়ি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল। নাড়ি পরীক্ষা আয়ুর্বেদের একটি প্রাচীন কৌশল, যার মাধ্যমে শরীরের ভারসাম্যহীনতা এবং রোগের কারণ নির্ণয় করা হয়। কুনাল ঘোষ বলেন, “এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানা এবং এর সঠিক প্রয়োগ দেখা সত্যিই অভূতপূর্ব।
এটি আমাদের প্রাচীন চিকিৎসা বিজ্ঞানের গভীরতা ও কার্যকারিতার প্রমাণ।”অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিধায়ক মলয় মজুমদার এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “আয়ুরমিত্রের এই কর্মসূচি কেবল স্বাস্থ্য সচেতনতাই নয়, পরিবেশ সংরক্ষণেও অবদান রাখছে। ভেষজ গাছের চারা বিতরণের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দারা উৎসাহিত হচ্ছেন, যা আমাদের সমাজের জন্য ইতিবাচক।”
সাংবাদিক দেবদূত ঘোষঠাকুরও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “আয়ুর্বেদের মতো প্রাচীন জ্ঞানের সঙ্গে আধুনিক সমাজকে সংযুক্ত করার এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”আয়ুরমিত্রের এই উদ্যোগ কলকাতায় আয়ুর্বেদ চিকিৎসার প্রসারে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গৌতম ব্রহ্ম এবং সুচেতা ঘোষ জানিয়েছেন, তারা ভবিষ্যতেও এই ধরনের কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়ুর্বেদের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন।
এডমুন্ড-সায়নের দাপটে প্রথমার্ধে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল
এই ধরনের উদ্যোগ শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সচেতনতাই নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।পশ্চিমবঙ্গে আয়ুর্বেদের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, এবং সরকারও এই চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে আয়ুর্বেদ শিক্ষার প্রসার এবং গবেষণার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আয়ুরমিত্রের মতো সংস্থার উদ্যোগ এই প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করছে। এই ধরনের কর্মসূচি ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষকে আয়ুর্বেদের প্রতি আকৃষ্ট করবে বলে আশা করা হচ্ছে।