জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এশিয়া কাপের দিন ঘোষণা নকভির

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (Asia Cup) চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান মোহসিন নকভি ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৫ সালের পুরুষদের এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সংযুক্ত…

Asia Cup date fixed

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (Asia Cup) চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান মোহসিন নকভি ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৫ সালের পুরুষদের এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণা তিনি শনিবার সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ২০২৫ সালের এসিসি পুরুষদের এশিয়া কাপ ইউএইতে অনুষ্ঠিত হবে। আমরা ক্রিকেটের একটি দুর্দান্ত প্রদর্শনীর জন্য অপেক্ষা করছি।” তিনি আরও জানান, টুর্নামেন্টের বিস্তারিত সূচি শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।

   

এই টুর্নামেন্টটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য একটি প্রস্তুতিমূলক ইভেন্ট হিসেবে কাজ করবে। এই টুর্নামেন্টে মোট আটটি দল অংশ নেবে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পাঁচটি পূর্ণ সদস্য—ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ—স্বয়ংক্রিয়ভাবে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে।

এছাড়া ২০২৪ সালের এসিসি পুরুষদের প্রিমিয়ার কাপে শীর্ষ তিনে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান এবং হংকংও এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। টুর্নামেন্টের কাঠামোতে দুটি গ্রুপে চারটি করে দল থাকবে, এবং প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সুপার ফোর পর্বে উঠবে। সুপার ফোরের শীর্ষ দুটি দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে।

এই টুর্নামেন্টটি মূলত ভারতের আয়োজন করার কথা ছিল, কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে এটি ইউএইতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি পারস্পরিক চুক্তির ফলে কোনও দল একে অপরের দেশে খেলতে যাবে না।

ফলে, নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে ইউএইর দুবাই এবং আবুধাবি এই টুর্নামেন্টের ম্যাচ আয়োজন করবে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) মধ্যস্থতায় গৃহীত হয়েছে, যা নিশ্চিত করে যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচগুলি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।

মোহসিন নকভি, যিনি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পিসিবি চেয়ারম্যান এবং ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে এসিসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এই টুর্নামেন্টকে সফল করার জন্য সকল সদস্য বোর্ডের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “এশিয়া ক্রিকেটের হৃদস্পন্দন, এবং আমি এই খেলার বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রভাব বাড়াতে সকল সদস্য বোর্ডের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

Advertisements

তাঁর নেতৃত্বে এসিসি ঢাকায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এই টুর্নামেন্টের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সভায় ২৫টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন, যদিও ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লার নেতৃত্বে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছিল।

এশিয়া কাপের এই সংস্করণটি ভারতের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। ২০২৩ সালে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ওয়ানডে ফরম্যাটের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ভারত শিরোপা জিতেছিল। তবে, সেই টুর্নামেন্টটিও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে ভারতের ম্যাচগুলি শ্রীলঙ্কায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এই টুর্নামেন্টের আগে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ইউএই-এর মধ্যে একটি টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজও ইউএইতে অনুষ্ঠিত হবে, যা দলগুলির জন্য প্রস্তুতির একটি অতিরিক্ত সুযোগ প্রদান করবে। নকভি এই সিরিজের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন।

ইউএইতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। দুবাই, আবুধাবি এবং শারজাহর মাঠগুলি এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত। এই টুর্নামেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি বিশেষভাবে আলোচিত হবে, কারণ এই দুই দলের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ।

ম্যানচেস্টারের ময়দানে অনন্য নজির স্টোকসের

মোহসিন নকভির নেতৃত্বে এসিসি এশিয়ার ক্রিকেটের প্রসার এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই টুর্নামেন্টটি শুধুমাত্র এশিয়ার শীর্ষ দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়, বরং উদীয়মান দলগুলির জন্যও নিজেদের প্রমাণ করার একটি প্ল্যাটফর্ম। ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন এই টুর্নামেন্টের সূচি এবং ম্যাচগুলির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।